বরিশাল সিটি করপোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ এবার বরিশাল-৫ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন। আজ মঙ্গলবার তাঁর পক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ কে এম জাহাঙ্গীর।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে সাদিক আবদুল্লাহ ও তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা হতাশ হন। এ হতাশা কাটিয়ে রাজনীতিতে প্রভাব ধরে রাখতে সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপরতা শুরু করেন তিনি। বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে বেশ উত্তাপ ছড়িয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন পান বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। এই খবরে জাহিদ ফারুকের কর্মী-সমর্থকেরা নগরে আতশবাজি, মিষ্টি বিতরণসহ নানাভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশর করেন। অন্যদিকে সাদিক আবদুল্লাহকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করতে তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা তৎপর হয়ে ওঠেন। এতে উত্তাপে নতুন মাত্রা পায়।
মনোনয়ন ঘোষণার পর থেকেই সাদিক আবদুল্লাহর সমর্থক নেতা-কর্মীরা ফেসবুকে তাঁর পক্ষে নিয়ে নানা পোস্ট করছেন। কেউ কেউ সাদিক আবদুল্লাহকে সমর্থন করছেন—এমন ভোটার ও দলীয় নেতাদের বক্তব্য ভিডিওতে ধারণ করে প্রচার করছেন। এমন পরিস্থিতিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে সাদিক আবদুল্লাহর প্রতি তাঁর সমর্থক নেতা-কর্মীদের চাপ বাড়তে থাকে।
সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার রাতে নগরের কালীবাড়ি রোডে সাদিক আবদুল্লাহর বাসভবনে মহানগর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় সমর্থক নেতা-কর্মীরা সাদিক আবদুল্লাহকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার দাবি জানান। আজ বিকেলে তাঁর বাসভবনে সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য এবং অন্যদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা ডেকেছেন তিনি। সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আলোচনা শেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসতে পারে।
গতকাল রাতের আলোচনায় অংশ নেওয়া মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য এস এম জাকির হোসেন আজ সকালে বলেন, এটা কোনো আনুষ্ঠানিক সভা ছিল না। নেতা-কর্মীরা তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের মনোভাবের কথা জানিয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সাদিক আবদুল্লাহ আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত দেননি। তবে বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।
জানতে চাইলে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর আজ দুপুরে বলেন, ‘সাদিক আবদুল্লাহকে সদর আসনে প্রার্থী করার বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিত, তিনি প্রার্থী হবেন। এ জন্য আজ তাঁর পক্ষে আমরা মনোনয়নপত্র কিনব।’ তিনি আরও বলেন, যেহেতু দলীয়ভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি শিথিল করে দেওয়া হয়েছে, সে কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
গত সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাদিক আবদুল্লাহর বদলে তাঁর চাচা আবুল খায়ের আবদুল্লাহকে দলীয় মনোনয়ন দেয় আওয়ামী লীগ। এবার সংসদ নির্বাচনেও দলীয় মনোনয়ন চেয়েও পেলেন না তিনি। সাদিক আবদুল্লাহর কর্মী-সমর্থকেরা মনে করেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আবুল খায়ের আবদুল্লাহর দলীয় মনোনয়ন পাওয়া থেকে শুরু করে নির্বাচনে তাঁকে বিজয়ী করার পেছনে মুখ্য ভূমিকা পালন করেন প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক।