ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে চট্টগ্রামের মিরসরাই উপকূলের সন্দ্বীপ চ্যানেলে বালু তোলার ড্রেজার ডুবির ঘটনায় আরও চার শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছেন ডুবুরি ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টার মধ্যে ড্রেজারের ভেতর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
যাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে তাঁরা হলেন- মো. আলম সর্দার আল আমিন (৩২), শাহীন মোল্লা (৩৫), তারেক (২৯) ও আবুল বাশার (৩৫)। এর আগে গত দুই দিনে আল আমিন, মাহমুদ মোল্লা, জাহিদ ও ইমাম মোল্লা নামে চার জনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছিল। নিহত আট জনের সকলেই পটুয়াখালী সদর উপজেলার জৈনকাঠী এলাকার বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ তথ্য জানিয়েছেন মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান।
গত সোমবার রাতে উপজেলার সাহেরখালী ইউনিয়নের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরের ৩ নম্বর জেটি এলাকার পশ্চিমে এ ড্রেজারডুবির ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার সকাল থেকে উদ্ধারকাজ শুরু করে প্রশাসন।
ড্রেজারটি থেকে বেঁচে ফেরা শ্রমিক মো. সালাম জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে তীব্র বাতাস ও ঢেউ ওঠায় সৈকত-২ নামে সাগরে বালু তোলার ড্রেজার মিরসরাই উপকূলের সন্দ্বীপ চ্যানেলে ডুবে যায়। ড্রেজারটির মালিক সৈকত এন্টারপ্রাইজ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে মিরসরাইয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরে নিয়োগ দিয়েছে বেপজা। ড্রেজারটিতে থাকা ৯ শ্রমিকের মধ্যে তিনি কিনারে আসতে পারলেও বাকি ৮ শ্রমিক আটকা পড়েন।
পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিনহাজুর রহমান জানান, দুর্ঘটনার পরপরই অন্য শ্রমিকেরা নৌকা নিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের চেষ্টা করেন। তখন তারা ভেতরে আটকা পড়া শ্রমিকদের মৃত অবস্থায় দেখেন।
এর প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, এ ঘটনায় আটজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা হলেন- ইমাম মোল্লা, মাহমুদ মোল্লা, শাহীন মোল্লা, আল আমিন, মো. তারেক ও বাশার। অন্য দুজনের নাম জানা যায়নি।
উল্লেখ্য, ভারী বর্ষণ আর জলোচ্ছ্বাস সঙ্গী করে গত সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। মধ্যরাত নাগাদ ভোলার কাছ দিয়ে এ ঝড় পুরোপুরি স্থলভাগে উঠে আসে এবং বৃষ্টি ঝরিয়ে দুর্বল হতে হতে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দমকা বাতাসে সারাদেশে অন্তত ৩৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আনুমানিক ১০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।