বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের কাছাকাছি মিয়ানমারের পরিস্থিতি এখন শান্ত। সেখানে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিবি) সীমান্তচৌকি এলাকায় গত সোমবার গোলাগুলি হলেও গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে কোনো গোলাগুলির ঘটনা ঘটেনি। সীমান্তের ওপারে গোলাগুলির ঘটনায় ঘুমধুমে গত সোমবার দুপুরে ছুটি দেয়া পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার পাঠদান কার্যক্রম চলেছে।
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ত্রিরতন চাকমা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ঘুমধুম সীমান্তের ওপারের পরিস্থিতি শান্ত। তাই সোমবার কিছু সময়ের জন্য ছুটি দেয়া বিদ্যালয়গুলো খোলা হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক মনে হলে আবারো ছুটি দেয়া হবে।
সীমান্ত পরিস্থিতি সরাসরি দেখার জন্য আজ বুধবার জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন ঘুমধুমে যাচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে পুলিশ সুপার সৈকত শাহিন থাকবেন। এর আগে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শন করেছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ঘুমধুম কোনোপাড়া, তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি মিয়ানমারের বিজিপির তিনটি সীমান্তচৌকি ও ক্যাম্প আছে। সেখানে আপাতত কোনো গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে না। তবে যেকোনো মুহূর্তে আবার পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটতে পারে। অনিশ্চিত অবস্থায় আছেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। সোমবার তুমব্রু এলাকার বিপরীতে ঢেঁকিবনিয়া বিজিপি সীমান্তচৌকি এলাকায় গোলাগুলির সময় মর্টারশেলের বিস্ফোরিত একটি অংশ শূন্যরেখায় এসে পড়লে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে সীমান্তের কাছাকাছি পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অর্ধদিবস ছুটি দেয়া হয়েছিলো।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য দীল মোহাম্মদ বলেন, ঘুমধুম সীমান্তে গতবছর থেকে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির (এএ) সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও বিজিপির গোলাগুলির ঘটনা ঘটে আসছে। সীমান্ত এলাকার মানুষ এর সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন। যদিও গোলাগুলির হলে সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। আবার গোলাগুলি বন্ধ হলে যে যাঁর মতো স্বাভাবিকভাবে খেতখামারে কাজ করেন।
জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ গোলযোগের কারণে ঘুমধুমের সীমান্তে মাঝেমধ্যে সমস্যা হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার সকাল থেকে কোনো সমস্যার সংবাদ পাওয়া যায়নি। বুধবার তিনি ও পুলিশ সুপার ঘুমধুম সীমান্ত পরিদর্শনে যাবেন।