পাহাড়ি–বাঙালি সংঘাতের জেরে রাঙামাটিতে জারি করা ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে সাংবাদিকদের সামনে এ ঘোষণা দেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। রাঙামাটিতে জারি করা ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করে নিলেও মানুষের মধ্যে এখনও আতঙ্ক বিরাজ করছে। শহরে বন্ধ রয়েছে দোকানপাট। সড়কেও মানুষ কম।
এদিকে রাঙামাটির পাশাপাশি পার্বত্য আরও দুই জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পাহাড়িদের বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা ৭২ ঘণ্টার অবরোধের আজ দ্বিতীয় দিন চলছে। অবরোধে খাগড়াছড়ির সঙ্গে রাঙামাটি, ঢাকা ও চট্টগ্রামের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙাসহ উপজেলাগুলোতেও সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
হামলায় যে স্থানগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, রোববার সকালে ওই স্থানগুলো পরিদর্শন করেছেন রাঙামাটি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, সেনা রিজিয়ন কমন্ডারসহ জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পরিদর্শন শেষে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করা হচ্ছে। ক্ষতিপূরণের জন্য মন্ত্রনণালয়ে পাঠানো হবে।
এদিকে সন্ধ্যায় হলেই গুজব ছড়িয়ে পড়ছে জেলা শহরে। নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন সবাই। গুজব প্রচারকারীকে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার এসএম ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেছেন, এ ঘটনায় এ পর্যন্ত দুটি মামলা করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতার চেষ্টা চলছে। শুক্রবারের ঘটনায় নিহত অনিক চাকমার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর সকালে খাগড়াছড়ির পানখাইয়া পাড়ার নিউজিল্যান্ডে রাস্তায় মামুন নামে একজনের মরদেহ পাওয়া যায়। পুলিশের তথ্যমতে, মামুন বাইক চুরি করে দ্রুতগতিতে পালাতে হিয়ে বিদ্যুতের পোলের সাথে ধাক্কা খেয়ে আহত হন। তখন তাকে ধাওয়া করা লোকজন পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলে মামুনের মৃত্যু হয়। মামুনের বিরুদ্ধে ১৪টি চুরি মামলা এবং দুটি মাদক মামলা ছিল।
মামুনের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভের পর বাস স্টেশন এলাকায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাঙামাটিতে বিক্ষোভের ডাক দেন পাহাড়ি সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীরা। খাগড়াছড়ির সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে রাঙামাটিতেও। সংঘাতে সবমিলিয়ে চারজন নিহত হন।