পুরান ঢাকার সূত্রাপুর মৌজা এলাকা খাসমহলভুক্ত করায় বিপাকে এই এলাকার প্রায় ৩০ লাখ বাসিন্দা। তারা খাজনা দিতে না পারায় বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি ও পৈত্রিক সম্পত্তির নামজারি করতে পারছেন না। তাই সূত্রাপুরকে খাসমহালমুক্ত করে খাজনা আদায়ের দাবি জানিয়েছেন এই এলাকার বাসিন্দারা।
মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে এ দাবি জানানো হয়। সূত্রাপুর মৌজার খাজনা বন্ধের প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে পুরনো ঢাকা নাগরিক কমিটি। এতে সভাপতিত্ব করেন কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান বকুল, লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন চৌধুরী। এ ছাড়া আরো বক্তব্য রাখেন মজিবুর রহমান খান, সাংবাদিক মোহাম্মদ মহসীন ও রেজাউল করিম বাবু প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, পুরানো ঢাকার সূত্রাপুর, গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, শ্যামপুর, কোতোয়ালী ও এর আশপাশ এলাকা প্রায় ৩০ লাখ মানুষ। এই বাসিন্দারা ভূমির খাজনা যুগযুগ ধরে পরিশোধ করে আসছে। কিন্তু ২০১১ সালে ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধিশাখা-৮ এক পরিপত্র দ্বারা পুরনো ঢাকার সূত্রাপুর মৌজার খাজনা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। ভূমি মন্ত্রণালয়ের কিছু সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী হীনউদ্দেশ্যে ২০১১ সালে ৭০-৮০ বছর সূত্রাপুর মৌজার ৫৪৮ তৌজির লাখ লাখ মানুষ বাড়ি-ঘর, জায়গা-জমি ও সম্পত্তিকে অবৈধভাবে খাসমহল ও লীজের নামে নামজারি ও খাজনা নেয়া বন্ধ করে রাখে। ফলে এ এলাকার মানুষরা বাড়ি, জমি পৈত্রিক সম্পত্তি নামজারি করতে পারছে না, খাজনাও জমা নিচ্ছে না। জমি হস্তান্তর, জমি ক্রয়-বিক্রয় ও রেজিস্ট্রি করতে পারছে না। এমনকি পিতা-মাতার মৃত্যুর পর ওয়ারিশরা বাড়ি ঘরের ভাগাভাগি বা বণ্টননামা, হেবা রেজিস্ট্রি ও করতে পারছে না।
সংবাদ সম্মেলন ফজলুর রহমান বলেন, এই এলাকার মানুষদের এসএ, সিএস, আরএস ও সর্বশেষ সিটি জরিপের পর্চায় তাদের নিজের বা বাবা, দাদা বা পিতাদের নামে রেকর্ডও আছে। সরকার খাজনা না নেয়ায় বিগত ১৩ বছর ধরে তারা ভোগান্তির মধ্যে আছে। ভূমির নামজারি না করা এবং ভূমি উন্নয়ন কর না নেয়ার কারণে সরকার নিজেও প্রতি বছর শত শত কোটি টাকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অবিলম্বে সূত্রাপুর মৌজার ভূমি খাসমহলমুক্ত করা এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের জারি করা পরিপত্র প্রত্যাহার করে পুনরায় খাজনা বা ভূমি উন্নয়ন কর নেয়ার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।