ময়মনসিংহে আদালতে নির্দেশে দাফনের তিন মাস পর কবর থেকে তোলা হলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত নাজমুল ইসলাম রাজু ও শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহিনের মরদেহ।
পরিবারের মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বুধবার (১৩ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে ওই দুজনের মরদেহ উত্তোলন করা হয়।
গত ৪ ও ৫ আগস্ট রাজধানীর উত্তরায় গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারানো পোশাককর্মী নাজমুল ইসলাম রাজু ও শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহিনের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই ময়মনসিংহে মরদেহ দাফন করা হয়েছিল।
জানা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ময়মনসিংহ নগরীর ভাটিকাশর কবরস্থান থেকে তোলা হয় শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মাহিনের মরদেহ। ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে রাজউক কমার্শিয়াল কমপ্লেক্সের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারান মাহিন।
গত ২১ আগস্ট মাহিনের বাবা জামিল হোসেন উত্তরা পশ্চিম থানায় শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের নাম ও অজ্ঞাত পরিচয় ৬০০ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে নগরের কালীবাড়ি কবরস্থান থেকে নাজমুল ইসলাম রাজুর মরদেহ উত্তোলন করা হয়। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের খবরে আনন্দ মিছিলে অংশ নিতে গিয়ে উত্তরা পূর্ব থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন পোশাককর্মী নাজমুল। রাজুর মৃত্যুর ঘটনায় উত্তরা পূর্ব থানায় একটি হত্যা মামলা করেন তার ছোট ভাই রেজাউল।
তদন্তকারী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান জানান, গত ২৫ আগস্ট থানায় করা মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৮৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও ২০০ থেকে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডির পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান। ময়নাতদন্ত ছাড়াই মাহিনের মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। গত ২৩ অক্টোবর আদালত মরদেহ উত্তোলনের অনুমতি দেন। এর প্রেক্ষিতে আজ মরদেহ উত্তোলন করা হয়। হত্যায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন স্বজন ও স্থানীয়রা
মোস্তাফিজুর রহমান আরো বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের আদেশে ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আল ইমরানের উপস্থিতিতে দাফনের ৩ মাস ৭ দিন পর মাহিনের মরদেহ ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম নাজমুস ছালেহীনের উপস্থিতিতে দাফনের ৩ মাস ৬ দিন পর নাজমুলের এ মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এ সময় সিআইডি, থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেলের মর্গে পাঠানো হয়।
নিহত মাহিন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজিতে কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাজমুল ইসলাম উত্তরার আজমপুর এলাকায় একটি কারখানায় দরজির কাজ করতেন।