গণতন্ত্র ও মানুষের ভোটাধিকার ধ্বংস করার কারণে শেখ হাসিনার ন্যক্কারজনক পতন ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আব্দুল কাদের সিদ্দিকী।
রোববার (১৭ নভেম্বর) সকালে টাঙ্গাইলের সন্তোষে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানানোর পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রণাঙ্গনের এই বীর যোদ্ধা বলেন, এই দেশের মানুষ চায় গণতন্ত্র, চায় ভোটাধিকার। শেখ হাসিনার এই রকম ন্যক্কারজনক পতনের কারণ তিনি মানুষের ভোটাধিকার দেননি। মানুষের ভোটাধিকারকে সম্মান করেননি। পরপর কয়েকবার ভোট দিতে দেন নাই, যার ফল এই পতন। দীর্ঘ সময় মানুষকে ভোটাধিকার ছাড়া রাখলে এখন যারা ক্ষমতায় আছেন তাদেরও পরিণতি খুব ভালো হবে না।
কাদের সিদ্দিকী বলেন, যারা সরকার চালাচ্ছে তাদের অনুরোধ করব, তারা যেন দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করেন। ক্ষমতা কারও জন্য চিরস্থায়ী নয়, যারা ছিলেন তাদের জন্য যেমন নয়; আজকে যারা এসেছেন তাদের জন্যও। এজন্য দেশের মানুষের কথা চিন্তা করুন, দেশের মানুষকে সম্মান করুন।
মওলানা ভাসানীর অবদান স্মরণ করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, মওলানা ভাসানীর জন্ম না হলে পাকিস্তান হতো না। আর পাকিস্তান না হলে বাংলাদেশ হতো না। বাংলাদেশ না হলে আজকে আমাদের এই অবস্থা হতো না। অথচ এই মহান ব্যক্তির অনাদর দেখে খুব কষ্ট লাগে, খুব খারাপ লাগে।
তাই দেশের জন্য যাদের অবদান আছে তাদের যথাযোগ্য সম্মান দিয়ে রাষ্ট্র চালানোর আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার আজিম আখন্দের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ভাসানীর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও ভাসানী পরিবারের পক্ষ থেকে মাজারে শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদেরও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর কথা রয়েছে।
মজলুম জননেতা হিসেবে সুপরিচিত মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ১৯৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ নভেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত আওয়ামী মুসলিম লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মাওলানা ভাসানী।
জাতীয় সংকটে জনগণের পাশে থেকে মওলানা ভাসানী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করতেন। দীর্ঘ কর্মজীবনে দেশ ও জনগণের জন্য নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে গেছেন। ব্যক্তি জীবনে ছিলেন নির্মোহ, অনাড়ম্বর ও অত্যন্ত সাদাসিধে।
শোষণ ও বঞ্চনাহীন, প্রগতিশীল, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গঠনের জন্য ভাসানী আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে তার আদর্শিক ঐক্য ও রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতা ছিল।