বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, গত ১৭ বছরে হাজার হাজার বিএনপি নেতা-কর্মী গুম হয়েছে, খুন হয়েছে, পঙ্গু হয়েছে। এত ত্যাগের পর বিএনপি একটি পরিণত রাজনৈতিক দলে রূপান্তর হয়েছে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা জ্বলে পুড়ে খাটি সোনায় পরিণত হয়েছে। যেই দলের নেতা-কর্মীরা ত্যাগ করতে শেখে, জীবন দিতে শেখে, ব্যবসা হারাতে শেখে, চাকরি হারাতে শেখে, গনতন্ত্রের জন্য, বাংলাদেশের মানুষের ভোটাধিকারের জন্য। সেই দলকে কেউ কখনো নিশ্চিহ্ন করতে পারে না।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রামের উলিপুরে শহীদ মিনার চত্বরে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ক্ষমতার কেন্দ্র বিন্দু সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছিল দৈত্যের মত, আরেকটা দৈত্য যাতে সৃষ্টি না হয় এজন্য ক্ষমতার ভারসাম্য সৃষ্টি করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর হাতে সব ক্ষমতা দেয়া যাবে না। দুই বারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের মধ্যেই সকল সংস্কার কর্মসূচি রয়েছে। জনগণের ভোটে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পালামেন্ট গঠন করা হবে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের নেতারা পুলিশের হাতে ও পুলিশ হেফাজতে নিহত হয়েছেন। জেল খানায় চিকিৎসার অভাবে নিহত হয়েছেন। বিএনপির ৬০ লাখের অধিক নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমাদের অধিক সময় কেটেছে কোর্টের মধ্যে। এই আন্দোলনের সফলতা শেখ হাসিনার পলায়ন পরবর্তী সময় থেকে এই পর্যন্ত যে আন্দোলন গুলো হচ্ছে আমরা সেগুলো নিয়ে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি করতে চাই না। বাংলাদেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে গত ১৭ বছর লড়াই করেছেন। শেষ পর্যন্ত আগস্টের ৫ তারিখ আমরা সবাই মিলে এই আন্দোলকে সফল করেছি। সুতরাং আন্দোলনে কার কতটুকু কৃতিত্ব এই বিষয়ে কোনো বির্তক সৃষ্টি করা বিএনপির কোন ইচ্ছা নাই। আর কারো যদি কোনো ইচ্ছা থাকে তাহলে তারা এই আন্দোলনের প্রতি অসম্মান জানাবে। এই আন্দোলন স্বল্প মেয়াদী কোন আন্দোলন ছিল না। এই আন্দোলন দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন। এই আন্দোলনের কৃতিত্ব আমরা বাংলাদেশের সবাইকে দিতে চাই। বিএনপি একা নিতে চায় না। কিন্তু কেউ যদি এই আন্দোলনের কৃতিত্ব হাইজ্যাক করে মনে করেন, তারাই সব করেছে, তাহলে তারা এই আন্দোলনের প্রতি অসম্মান জানাবে।
উলিপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি হায়দার আলী মিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুর রহমান বুলবুলের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবীব দুলু, চেয়ারপার্সনের ফরেন এ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য ও কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তাসভীর উল ইসলাম, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল হোসাইন কায়কোবাদ, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রেশমা সুলতানা, জেলা যুবদলের সভাপতি রায়হান কবির, সাধারণ সম্পাদক নাদিম আহম্মেদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আমিমুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক হাসান জোবায়ের হিমেল প্রমুখ।
এ সময় উপজেলা বিএনপির মহিলা দল, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবকদলসহ বিভিন্ন পর্যায়ের হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।