রাজশাহী আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে সীমাহীন দুর্নীতি-অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ভুক্তভোগীরা। এ সময় পাসপোর্ট অফিসকে দুর্নীতি মুক্ত করতে একমাস সময় বেঁধে দিয়েছেন তারা।
বুধবার (২০ নভেম্বর) সকালে পাসপোর্ট অফিসের সামনে সকাল ১১টা থেকে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় তারা ঘুষখোর এডি, ডিডি এবং দুর্নীতিবাজ অফিসারদের অপসারণের দাবি জানান তারা।
পরে তাঁরা কার্যালয়টির উপপরিচালকের সঙ্গে দেখা করে প্রতিবাদ জানান এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য এক মাসের সময়সীমা বেঁধে দেন। সমস্যা সমাধান করা না হলে আরো বড় কর্মসূচি ঘোষণার হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, সাধারণ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা। কিন্তু দালালের মাধ্যমে যেসব ফাইল জমা হয়, সেগুলোর কাজই শেষ হয় দ্রুত। কয়েক মাস ধরে চলা এমন অনিয়মের প্রতিবাদে রাস্তায় দাঁড়িয়েছে রাজশাহীর নাগরিক সমাজ। পরে উপপরিচালক রোজী খন্দকারের সঙ্গে দেখা করে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা অনিয়ম দূর করতে এক মাসের সময় বেঁধে দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে নাগরিক ভোগান্তি দূর করা না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, ক্যাবের রাজশাহীর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) জেলার সম্পাদক মাহমুদুল হক, নারীনেত্রী রোজিটি নাজনীন, সেলিনা বেগম প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তাঁরা লক্ষ করেছেন, দালালের মাধ্যমে আসা বিশেষ ফাইলগুলো সরাসরি দোতলায় উপপরিচালক রোজী খন্দকারের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি এসব ফাইলে সই করে দেন। তারপর দোতলাতেই সহকারী পরিচালক এসব ফাইল কম্পিউটারে এন্ট্রি করেন। এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে ফাইলগুলো নিচতলায় চলে আসে। সেখানে ছবি তুলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই পাসপোর্টপ্রত্যাশীরা বাড়ি ফিরে যান। আর যাঁরা দালালকে অতিরিক্ত টাকা না দিয়ে নিজেরাই এসে লাইনে দাঁড়ান, তাঁদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিচতলায় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়েই থাকতে হয়। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্য, দালাল না ধরে ফাইল আনলে শুধু ভুলই খোঁজেন কর্মকর্তারা। আর দালালের মাধ্যমে ফাইল এলে কিছুই দেখা হয় না। দালালের মাধ্যমে পাসপোর্ট অফিসের প্রত্যেক কর্মকর্তা প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। আর নিচতলায় যে ব্যক্তি সাধারণ মানুষের পাসপোর্টের ফাইল এন্ট্রি করেন, প্রায়ই তিনি ডেস্কে থাকেন না। ফলে সাধারণ মানুষের লাইন আর এগোয় না। এসব অনিয়ম অচিরেই বন্ধ করতে হবে। পাশাপাশি পাসপোর্ট অফিসের জনবল ও ছবি তোলার কক্ষ বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়।