স্ত্রী মাহমুদা আক্তার মিতু হত্যা মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের অন্তবর্তী জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছেন তার শ্বশুর মোশাররফ হোসেন।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিচারপতি মো. রেজাউল হকের চেম্বার আদালতে আবেদনটি উপস্থাপন করা হলে আগামী ৩ ডিসেম্বর তা আদেশের জন্য রাখেন আদালত। আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মাহবুবুর রহমান।
বাবুল আক্তারের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন ও মোহাম্মদ শিশির মনির।
আবেদনকারী মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছি। আদেশ হয়নি। আগামী ৩ ডিসেম্বর আদেশের জন্য রাখা হয়েছে।’ সে পর্যন্ত বাবুল আক্তারের মুক্তি মিলছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ বাবুল আক্তারকে ছয় মাসের জামিন দেন। বাবুল আক্তারকে কেন নিয়মিত জামিন দেয়া হবে না, সে প্রশ্নে রুল জারি করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
জানা যায়, ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ জুন ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে গিয়ে নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় খুন হন মাহমুদা খানম।
তখন তাঁর স্বামী বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ মে এ মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই দিনই মাহমুদার বাবা মোশাররফ হোসেন বাদী হয়ে বাবুলসহ আটজনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা করেন। সেদিনই বাবুল আক্তারকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।
বাবুল ও শ্বশুরের করা দুটি মামলা তদন্ত করে পিবিআই।
শ্বশুরের মামলায় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৫ জানুয়ারি পিবিআই চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এই প্রতিবেদন গ্রহণ করে বাবুল আক্তারকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তার আগে বাবুল আক্তারের করা মামলায় ৯ জানুয়ারি তাঁকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এ মামলায় ২০২২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পিবিআই আদালতে অভিযোগপত্র দেয়। বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে পিবিআইয়ের দেয়া অভিযোগপত্র ওই বছর ১০ অক্টোবর গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
গত বছরের ১৩ মার্চ বাবুল আক্তারসহ সাতজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত। ৯ এপ্রিল সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এ মামলায় বিচারিক আদালতে আদালতে বিফল হয়ে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ৬ মার্চ হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন বাবুল আক্তার। শুনানি শেষে ১৪ মার্চ রুল দেন আদালত। কেন জামিন দেয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয় রুলে।
গত বছর ৭ ডিসেম্বর রুল শুনানি শুরু হয়। শুনানির পর আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেন উচ্চ আদালত। এরপর নতুন করে জামিন আবেদন করেন বাবুল আক্তার।