এবার বেনাপোল সীমান্তে দুই বাংলাদেশিকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ বিএসএফের বিরুদ্ধে। ইছামতি নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। একই জায়গায় মিলে আরো এক বাংলাদেশির মরদেহ। স্থানীয়দের ধারণা, একইভাবে তাকেও হত্যা করা হতে পারে।
এর মধ্যে একজনের মরদেহ নদীতে ভাসমান অবস্থায় এবং দুইজনের মরদেহ নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টা থেকে বিকেল পৌনে ৪টার মধ্যে মরদেহ তিনটি উদ্ধার করা হয়।
জানা যায়, বিকেলে শার্শা থানাধীন পাঁচ ভুলোট সীমান্তের ইছামতী নদী থেকে ভাসমান অবস্থা একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। যার মরদেহ উদ্ধার হয়েছে, তিনি হলেন বেনাপোল পোর্ট থানাধীন দিঘিরপাড় গ্রামের জামিল ঢালির ছেলে সাকিব হোসেন।
তার নানা জবেদ আলি জানান, সাকিব ট্রাকের হেলপার। তিনি গতকাল ট্রাকে হেলপারি করার জন্য দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন। পরে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজ বিকেলে লোকমুখে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে শনাক্ত করেন।
খুলনা ২১-বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল খুরশিদ আহমেদ জানান, বিকেলে পাঁচভুলোট সীমান্তের ইছামতী নদীতে আরেক যুবকের মরদেহ ভাসতে দেখা যায়। পরে সেখানে গিয়ে নদী থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। বিএসএফের কাছে তারা এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু বিএসএফের পক্ষ থেকে বিষয়টি অস্বীকার করা হয়।
এর আগে সকালে বেনাপোল পোর্ট থানাধীন পুটখালী সীমান্ত থেকে একজন ও শার্শা থানাধীন পাঁচ ভুলোট সীমান্ত থেকে আরো একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ দুজন হলেন-বেনাপোল পৌর এলাকার কাগজ পুকুর গ্রামের ইউনুস মোড়লের ছেলে জাহাঙ্গীর কবির (৩৭) ও দীঘিরপাড় গ্রামের মৃত আরিফ হোসেনের ছেলে সাবুর আলী (৩৫)।
সাবুর হোসেনের স্ত্রী জানান, সকালে তারা লোক মুখে খবর পান পুটখালী সীমান্তের ইছামতী নদী পাড়ে তার স্বামী পড়ে আছেন। তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসার পথেই তিনি মারা যান।
জাহাঙ্গীর কবিরের ভাই বলেন, তার ভাই দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে ভারত থাকেন। তিনি ভারতীয় মেয়েকে বিয়ে করে ওই দেশের নাগরিক হয়ে বসবাস করতেন। ভারতীয় ভিসা বন্ধ থাকায় তিনি অবৈধ পথে কয়দিন আগে ভারত থেকে বাড়িতে এসেছিলেন। গতকাল রাতে তিনি ভারতে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হন। পরে সকালে লোকমুখে খবর পাই ভাইয়ের মরদেহ ভুলোট সীমান্তের ইছামতী নদীর পাড়ে পড়ে আছে। পরে পুলিশ গিয়ে ভাইয়ের মরদেহ সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে।
বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল মিয়া জানান, লোকমুখে খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
এছাড়া কীভাবে মরদেহ দুটি এখানে এলো এবং কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।