সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির বলেছেন, ভাঙা হবে না কিশোরগঞ্জ হাওরের আলোচিত ৩০ কিলোমিটার ‘অল-ওয়েদার সড়ক’। বন্যা মোকাবিলায় প্রয়োজনে হাওরের নদীগুলো ড্রেজিং করা হবে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে কিশোরগঞ্জের ইটনায় উপজেলা হল রুমে জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও সুধীজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে এসব কথা বলেন তিনি ।
ফাওজুল কবির বলেন, ‘এ সড়কটি নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছিল। যেহেতু সড়কটা হয়ে গেছে, তাই এর ভালোমন্দ নিয়ে আলোচনা করা হবে না। এ সড়কের ফলে যেসব সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেগুলো আমরা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করব।’
উপদেষ্টা বলেন, আমরা স্পষ্ট করতে চাই, আমাদের কারো ওপর দায়বদ্ধতা নেই। শুধু জুলাই-আগস্টের নিহত এবং যারা আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছেন তাদের ছাড়া। তাদের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতের আদানি কোম্পানি থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি হচ্ছে আন্তর্জাতিক চুক্তি। এটা হুট করেই বন্ধ করে দেয়া যাবে না। বিগত সময়ে বিভিন্ন চুক্তি হয়েছে যা দেশের স্বার্থে হয়নি। ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের আইনের অধীনে অনেক অন্যায় করা হয়েছে, যার ফলে আমরা এই আইন বাতিল করেছি।
তিনি আরো বলেন, বিগত সময়ে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে যেসব চুক্তি হয়েছে এসবের জন্য সাবেক বিচারপতি মঈনুল ইসলামের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বিশেষজ্ঞরা আছেন, তারা এসব বিষয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন।
মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এই কমিটি আদানি কোম্পানিসহ সাতটি বিষয়ে কাজ করছেন। তারা কাজ শেষে যে গাইডলাইন দেবেন তার ওপর ভিত্তি করে আমরা চিন্তা করব কার সঙ্গে চুক্তি রাখব আর কার সঙ্গে চুক্তি রাখব না।
আলোচনার সভার আগে তিনি অল-ওয়েদার সড়ক পরিদর্শন করেন।
এর আগে সকালে তিনি কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট সড়ক যথাযথমানে উন্নীতকরণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় চলমান কার্যক্রম পরিদর্শন ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। সেখান থেকে জেলার শতভাগ হাওর অধ্যুষিত উপজেলা ইটনায় যান।
শুক্রবার রাতে রেলগাড়িতে কিশোরগঞ্জ রেল ষ্টেশনে এসে পৌঁছেন উপদেষ্টা। আজ বিকেলে রেলগগাড়িতেই কিশোরগঞ্জ থেকে ঢাকা যাবেন তিনি।
প্রসঙ্গত, ইটনা, মিঠামইন ও অষ্টগ্রাম উপজেলাকে যুক্ত করে হাওরের মাঝখান দিয়ে তৈরি করা হয়েছে প্রায় ৩০ কিলোমিটার অল-ওয়েদার সড়ক। গত ২৩ নভেম্বর সিলেটে আয়োজিত এক কর্মশালায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার জানিয়েছিলেন, সিলেটের নদ–নদীর অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে ও বিভাগটিকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করতে প্রয়োজনে ইটনা–মিঠামইন–অষ্টগ্রাম সড়কের (কিশোরগঞ্জের অল ওয়েদার সড়ক) বেশ কিছু অংশ ভেঙে ফেলা হতে পারে। এ জন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্যোগ বাস্তবায়ন করা হবে।