শরীয়তপুরের জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল আমিনের (৪৫) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নিহত ওসির বড় ভাই আবুল কালাম বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে থানার ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষের জানালার সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় ওসি আল আমিনের লাশ উদ্ধার করেন তাঁর সহকর্মীরা। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একটি দল সন্ধ্যায় লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। রাতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উজ জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নজরুল ইসলাম বলেন, জাজিরা থানার ওসির লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তাঁর বড় ভাই একটি অপমৃত্যু মামলা করেছেন। এ ছাড়া ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করার জন্য জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে তাঁর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
শুক্রবার ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আল আমিনের লাশের ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে তাঁর লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর লাশটি শরীয়তপুর পুলিশ লাইনসে আনা হবে। সেখানে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরীফ উজ জামান বলেন, তিন সদস্যর একটি তদন্ত কমিটি গঠনের কথা মৌখিকভাবে শুনেছেন। এখনো কমিটি গঠন–সংক্রান্ত কাগজ হাতে পাননি। নিদের্শনা পেলে কমিটির অন্য সদস্যদের নিয়ে অনুসন্ধানের কাজ শুরু করবেন।
মৃত আল আমিন বরিশালের মুলাদি উপজেলার কাচিচর গ্রামের মৃত বেলায়েত হোসেনের ছেলে। জাজিরা থানা সূত্র জানায়, আল আমিন ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে পুলিশের চাকরিতে যোগ দেন। গত বছর ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি জাজিরা থানায় বদলি হয়ে আসেন। এর পর থেকে থানা ক্যাম্পাসের চারতলা ভবনের দ্বিতীয় তলার একটি কক্ষে থাকতেন। গতকাল সকালে তিনি থানায় তাঁর কার্যালয়ে না এলে ওই থানার এক কনস্টেবল বেলা ১১টার দিকে তাঁকে ফোন করে কিছু জরুরি নথিতে স্বাক্ষর দেয়ার কথা বলেন। তখন ফোন ধরে ওসি আল আমিন পরে স্বাক্ষর করবেন বলে ওই পুলিশ সদস্যকে জানিয়ে ফোন রেখে দেন। এর দুই ঘণ্টা পর তিনি তাঁর কার্যালয়ে না আসায় থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবদুস সালাম দ্বিতীয় তলায় ওসির কক্ষে যান। তখন কক্ষের দরজা ধাক্কা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে জানালার গ্রিলের সঙ্গে ওসির ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান।