নাটোর শহরের মহাশ্মশান মন্দিরে ‘চুরি করতে দেখে ফেলায়’ ছয় চোর মিলে তরুণ চন্দর দাসকে হত্যা করেছিল বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফাত হুসাইন। এ ঘটনায় পুলিশ সবুজ হোসেন (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেফতার করেছে।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে ওই মন্দির চত্বরে সাংবাদিকদের এ কথা জানান এসপি।
গত ২১ ডিসেম্বর সকালে শহরের মহাশ্মশান মন্দিরের বারান্দায় হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় তরুণ চন্দর দাসের মৃতদেহ পাওয়া যায়। তিনি শহরের আলাইপুর ধোপাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ছিলেন। মাঝেমধ্যে তিনি ওই মন্দিরে রাত্রিযাপন করতেন। এ ঘটনায় তাঁর ছেলে তপু কুমার দাস সদর থানায় হত্যা মামলা করেন।
গ্রেফতার হওয়া সবুজ হোসেনের বরাত দিয়ে এসপি মারুফাত হুসাইন বলেন, সবুজ শহরের সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্রের সক্রিয় সদস্য। তিনি ও তাঁর পাঁচ সহযোগী ২০ ডিসেম্বর রাত আটটার দিকে শ্মশানসংলগ্ন একটি লেবুবাগান থেকে এক বস্তা লেবু চুরি করেন। পরে দেয়াল টপকে তাঁরা শ্মশানে ঢুকে গাঁজা সেবন করেন। একপর্যায়ে তাঁরা মন্দিরের দানবাক্সের টাকা ও কাঁসার থালাবাসন চুরির সিদ্ধান্ত নেন। সে অনুযায়ী তাঁরা মন্দিরের গ্রিল ভেঙে টাকা ও থালাবাসন চুরি করেন। এ সময় তরুণ চন্দর দাস রাত্রিযাপনের জন্য ওই মন্দিরে ঢুকে পড়েন। তিনি চোরদের চুরি করতে দেখে ফেলে দ্রুত সেখান থেকে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু টের পেয়ে যাওয়ায় চোরেরা তাঁকে ধরে ফেলেন এবং হাত-মুখ বেঁধে ফেলে রাখে যান। পরে শ্বাস নিতে না পারায় তাঁর মৃত্যু হয়।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ছিল না বা নিহত ব্যক্তির সঙ্গে চোরদের কোনো বিরোধও ছিল না। ঘটনাক্রমে তরুণ চন্দর দাস মারা পড়েন। অথচ পাশের একটি দেশের গণমাধ্যমে ঘটনাটি বিকৃত করে প্রচার করা হয়। এ কারণে খুবই সতর্কতার সঙ্গে গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।
এসপি মারুফাত হুসাইন আরো বলেন, গ্রেফতার হওয়া সবুজ হোসেন ঘটনার সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁকে ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। কিন্তু তিনি মুঠোফোন বন্ধ করে বিভিন্ন স্থানে চলাফেরা করতে থাকেন। তিনি বিদেশে যাওয়ার জন্য পাসপোর্ট করারও চেষ্টা করছিলেন। চট্টগ্রামের শাহ আমানত এলাকায় তাঁর অবস্থান টের পেয়ে পুলিশ সেখানে গিয়ে তাঁকে গ্রেফতার করে। পরে তিনি পুলিশের কাছে সব ঘটনা খুলে বলেন। তাঁর দেয়া তথ্য যাচাই করে সত্যতা পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য পাঁচজনকে ধরার জন্য পুলিশ চেষ্টা করছে।