ঢাকা মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারি ২০২৫ , ৭ মাঘ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

আওয়ামী লীগের শাসনামলে উচ্চশিক্ষা এডুসাইডের শিকার হয়েছে

দেশবার্তা

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১১:০৬, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

আপডেট: ১১:১১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫

সর্বশেষ

আওয়ামী লীগের শাসনামলে উচ্চশিক্ষা এডুসাইডের শিকার হয়েছে

আওয়ামী লীগের শাসনামলে উচ্চশিক্ষা জেনোসাইড বা গণহত্যার মতো ‘এডুসাইডের’ (শিক্ষাব্যবস্থাকে হত্যা) শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। গত ১৬ বছরে প্রতিষ্ঠা করা ২৬ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সংকটের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এসব বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্ববিদ্যালয় বলতে তিনি কষ্ট পান। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের ‘দলীয় সমর্থক’ বানানোর ক্ষেত্রে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে কাজে লাগানো হয়েছে।

‘জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়: উচ্চশিক্ষার আত্মাহুতি’ শিরোনামে দেয়া এক বক্তৃতায় বাংলাদেশে উচ্চশিক্ষার বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান। তাঁর এই বক্তব্য ‘স্বৈরতন্ত্র থেকে গণতন্ত্রের পথ: বৈষম্যহীন বাংলাদেশের সন্ধানে’ শীর্ষক এক সেমিনারের অংশ ছিল।

সোমবার (২০ জানুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে দিনব্যাপী ওই সেমিনারের আয়োজন করে রাজনীতি, অর্থনীতি ও সমাজ বিশ্লেষণমূলক জার্নাল (সাময়িকী) সর্বজনকথা।

অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান নতুন কয়েকটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র তুলে ধরেন। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণকাজের প্রকল্প প্রস্তাবগুলো ‘খুবই কৌতূহলোদ্দীপক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন আছে, কিন্তু গ্রন্থাগার নেই। অর্থাৎ গ্রন্থাগার ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু শিক্ষক নিয়োগ বা বিভাগ খোলার ক্ষেত্রে সবাই আগ্রহী। বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার চেয়ে অন্য উদ্দেশ্যগুলো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে গেছে। শিক্ষা ও গবেষণার যে ন্যূনতম উপস্থিতি থাকা উচিত, সেটা নেই।

ইউজিসির এই সদস্য জানান, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৪-১৫ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে, কিন্তু এখনো ভাড়া করা ভবনে শ্রেণি কার্যক্রম চলে। এমন বিশ্ববিদ্যালয় আছে, যেগুলো ২০১৭-১৮ খ্রিষ্টাব্দে চালু হয়ে গেছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো নির্মাণকাজ শুরু হয়নি।

শিক্ষাকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে

দেশে এখন ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম চলছে জানিয়ে অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, আরও ৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন হয়েছে, কিন্তু এখনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগেই উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা নতুন জটিলতা তৈরি করছে।

নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় একাডেমিক (শিক্ষা) কার্যক্রমের চেয়ে নিয়োগ–বাণিজ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ করেন তানজীমউদ্দিন খান। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বা রেজিস্ট্রার পদে থাকা ব্যক্তিরা দুর্নীতির চর্চা তৈরি করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কথা প্রসঙ্গে জানতে পারলাম, বেতন স্কেল ১০ হাজার টাকার জন্য ১০ লাখ, ২০ হাজার টাকা স্কেলের জন্য ২০ লাখ টাকা দিতে হতো।’

ইউজিসির এই সদস্য বলেন, পদাধিকার বলে পাওয়া সরকারি সুবিধাগুলো উপাচার্যদের আকৃষ্ট করে, একটা আকর্ষণ তৈরি করে। ...বুদ্ধিবৃত্তিক সমাজ, বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের দলীয় সমর্থক বানানোর ক্ষেত্রে গত ১৬ বছরে ২৬টা বিশ্ববিদ্যালয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এত সুন্দর বাংলো, এত সুন্দর গাড়ি, এত সুন্দর কার্যালয়—এগুলোর প্রতি যে আকর্ষণ, তা অনেককেই উৎসাহিত করেছে সরকারি দলের সমর্থক হয়ে উঠতে।

তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘শিক্ষাব্যবস্থাটাকে একেবারেই ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যাকে আত্মাহুতি বলা ছাড়া অন্য কোনো শব্দ আমার জানা নেই। যদি আমরা প্রজন্মের কথা চিন্তা করি, প্রজন্মের ভাবনা থেকে এটা হচ্ছে একধরনের এডুসাইড।’

জনপ্রিয়