জয়পুরহাটের পাঁচবিবি সীমান্তে গোপনে প্রায় ২০ গজ কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। খবর পেয়ে বাধা দিয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে পতাকা বৈঠক করেছে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী।
এর আগে ভোরের দিকে পাঁচবিবি উচনা ঘোনাপাড়া ভারত সীমান্তের মাত্র ১০ গজ অভ্যন্তরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করে বিএসএফ।
বিজিবি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোরে সীমান্তের ২৮১ নম্বর মেইন পিলারের ৩৩, ৩৪ ও ৩৫ নম্বর সাব পিলার পর্যন্ত আনুমানিক ১০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের জন্য সরঞ্জাম আনেন বিএসএফের সদস্যরা। একপর্যায়ে প্রায় ২০ গজ কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ফেলেন তারা। স্থানীয়রা বিষয়টি বিজিবির হাটখোলা বিওপি ক্যাম্পের সদস্যদের জানান। এরপর বিজিবি সদস্যরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিএসএফ সদস্যদের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজে বাধা দেন। এতে বিএসএফ সদস্যরা কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজ স্থগিত করে চলে যান।
পরে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে বিজিবির হাটখোলা বিওপির নায়েব সুবেদার শাজাহান আলীর নেতৃত্বে ৪ জন সদস্য ও বিএসএফ চকগোপাল ক্যাম্প কমান্ডার জিতেন্দ্র কুমারের নেতৃত্বে ৩ জন সদস্য সীমান্তের ২৮১ নম্বর মেইন পিলারের ৩৫ নম্বর সাব পিলার এলাকায় পতাকা বৈঠক করেন।
জানতে চাইলে ২০ বিজিবির জয়পুরহাট ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল নাহিদ নেওয়াজ বলেন, তারা (বিএসএফ) ভুল স্বীকার করেছে, এটা আর করবে না বলে জানিয়েছে। তারা কিছু অংশ বেড়া দিয়েছিল, সেটি ওঠানোর ব্যাপারে বলা হয়েছে। তারা বলেছে এটি কোম্পানি পর্যায়ে সিদ্ধান্ত দিতে পারবে না। অধিনায়ককে বিষয়টি জানাবে বলেছে, আমিও তাদের অধিনায়ককে জানিয়েছি। অধিনায়ক নতুন এসেছেন, তিনি জায়গাটি দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চেয়েছেন। আমরা একটি প্রতিবাদলিপি পাঠিয়েছি।
প্রসঙ্গত, সীমান্ত আইন অনুযায়ী সীমান্তের ১৫০ গজের ভেতরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা যায় না। তবুও আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘন করে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্তে বারবার কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করছে ভারত। ওই উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের উচনা ঘোনাপাড়া সীমান্তে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের চেষ্টা করে বিএসএফ। বিজিবির বাধার মুখে তাদের সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এরপর ২১ ও ২২ সেপ্টেম্বর সোনাতলা সীমান্তের কিছু অংশে আবার নতুন করে বিজিবি সদস্যরা বিএসএফকে বাধা দেন। এ নিয়ে বিজিবি ও বিএসএফের মধ্যে বৈঠক হলে কয়েকমাস ধরে শান্ত থাকার পর আবারও আজ মঙ্গলবার বেড়া নির্মাণ করতে আসে বিএসএফ।