একসঙ্গে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে জামায়াত আমির শফিকুর রহমান চরমোনাই আহছানাবাদ জামিয়া রশীদিয়া ইসলামিয়া মাদরাসায় যান। সেখানেই তিনি চরমোনাই পীর ও ইসলামী আন্দোলনের আমির সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।
পরে দুই নেতা সংবাদ সম্মেলনে আসেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
ইসলামী আন্দোলনের সঙ্গে আলোচনাকে ‘শেষ নয়, শুরু’ হিসেবে অভিহিত করেন শফিকুর। তিনি বলেন, “জনগণের প্রত্যাশা, এদেশের দেশপ্রেমিক ইসলামিক জনতার প্রত্যাশা, সব কেন্দ্রে যেন একটি বাক্স থাকে।”
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জামায়াত আমির বলেন, “সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার প্রয়োজন। সেইটা আগে, তারপর নির্বাচন।”
দুই দলের সম্পর্কের উন্নয়নের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, “আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, ইসলামের পক্ষে যেন আমরা একটা বাক্স পাঠাতে পারি। সে চেষ্টা আমাদের আগে পরে চলছে, এখনও চলছে।”
তিনি বলেন, “৫ অগাস্টের নতুন স্বাধীনতার পর ইসলামের পক্ষে একটি ভালো ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। সেই ভাল ক্ষেত্র পেয়ে সময়োপযোগী শক্তিশালী করতে না পারি, সেটা আমাদের জন্য অকল্যাণ ও দুঃখজনক হবে। আমরা সবাই যেন এক হয়ে দেশ গড়ার কাজ করতে পারি।”
তিনি বলেন, “রাজনীতির মাঠে চিন্তার ব্যবধান থাকতে পারে। ভিন্নতা থাকতে পারে। আমাদের উদ্দেশ্য ঢাকা পৌঁছার।”
দুই দলের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বর্তমান পরিবেশে আমরা কাছাকাছি চলে আসছি বলতে পারেন।”
এ বিষয়ে জামায়াতের আমির বলেন, “নির্বাচন নিয়ে আমাদের দাবি আর উনাদের দাবি একই। আমাদের একটা রাজনৈতিক দাবির মধ্যেও কোনো কনফ্লিক্ট নেই। এক্ষেত্রে আমরা কোনো পরামর্শ করিনি, অন্তর থেকে জাতির প্রয়োজনে বের হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা কিছু মানা, না মানার মধ্যে আছি। আমরা পুরোটা মানতে চাই। পুরোটা এখানে কায়েম হয়েছে। এটা দেখতে চাই, এজন্য পুরো দেশবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।
“প্রশ্ন আসতে পারে যারা অমুসলিম, তাদের কী হবে? তাদের জন্য যে বিধান আছে, সেই বিধান কায়েম হবে। মদিনার বিধানের অধীনে সব ধর্মের মানুষ তাদের পূর্ণ নিরাপত্তা ভোগ করবে। নাগরিক সব অধিকার পাবে। মুসলমান ও অমুসলমান- এটা প্রশ্ন নয়। রাষ্ট্রের সঙ্গে কেউ যদি বেইমানী করে, ইসলামে তার জন্য কঠিন শাস্তির বিধান রয়েছে। এটা কোনো বিশেষ ধর্মের জন্য নয়। যিনি করবেন তার জন্য শাস্তি আছে।”
সংবাদ সম্মেলন শেষে দুই দলের শীর্ষ নেতারা চরমোনাই দরবার শরিফের মসজিদে একসঙ্গে জোহরের নামাজ আদায় করেন।
দুপুর ১২টার দিকে পৌঁছে জামায়াতে ইসলামীর আমির চরমোনাই আহছানাবাদ জামিয়া রশীদিয়া ইসলামি মাদ্রাসা পরিদর্শন করেন। পরে তারা একসঙ্গে দুপুরের খাবার খান।
পরে জামায়াতে ইসলামীর আমির নগরীর কেন্দ্রীয় ঈদগা ময়দানে দলের বরিশাল জেলা ও মহানগরের উদ্যোগে কর্মী সম্মেলনে অংশ নেন।