কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে ভ্রমণে ফেব্রুয়ারি মাসে সরকারি বিধি-নিষেধ প্রত্যাহার করে পর্যটক যাতায়াত উন্মুক্ত করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে দ্বীপবাসী। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১২টায় টেকনাফ উপজেলার সেন্টমার্টিন স্টেশনে দ্বীপবাসীর উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে দ্বীপবাসীর পাশাপাশি স্থানীয় হোটেল-মোটেল ও কটেজ মালিক সমিতি, ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার-টুয়াক, রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি, ট্রলার মালিক সমিতি, স্পিডবোট মালিক সমিতি, ভ্যানগাড়ি মালিক-শ্রমিক সমিতি এবং বাজার ব্যবসায়ী সমিতিসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের লোকেরা অংশগ্রহণ করেছেন।
মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল পরবর্তী সমাবেশে বক্তারা বলেন, চলতি পর্যটন মৌসুমে সরকারি বিধি-নিষেধের কারণে পর্যটক যাতায়াত সীমিত থাকায় এমনিতেই দ্বীপবাসী নানা সংকট ও সমস্যায় জর্জরিত। এতে আগামী বর্ষা মৌসুমে দ্বীপবাসীর দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করবে। তার উপর দীর্ঘদিনের দাবি উপেক্ষা করে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সরকারি নির্দেশনা বহাল রাখায় দুঃশ্চিন্তায় রয়েছে দ্বীপবাসী।
সমাবেশে বক্তারা দ্বীপবাসীর প্রাণের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দ্বীপবাসীর জীবন-জীবিকার কথা বিবেচনা করে সরকার যেন অন্তত ফেব্রুয়ারি মাসে জাহাজ চলাচল চালু রেখে পর্যটক যাতায়াতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে।
সেন্টমার্টিন বাজার সমিতির সভাপতি মাওলানা আব্দুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্টিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিলোত্তর পথসভায় বক্তব্য রাখেন টুয়াকের সদস্য আকতার নুর, আইনজীবী ও সমাজকর্মী কেফায়েত উল্লাহ খান, স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মী নুর মোহাম্মদ, সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব উল্লাহ খান ও হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন প্রমুখ।
টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, মানববন্ধনের বিষয়টি আমি শুনেছি। পর্যটন মৌসুমে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এখানকার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত বর্ধিত করার জন্য মানববন্ধন করেছেন। বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয়সহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সংশ্লিষ্টদের পাশাপাশি সকলকে অবহিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রাণলয়ের সিদ্ধান্ত মতে প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে পর্যটক ভ্রমনের শেষ তারিখ (৩১ জানুয়ারি)। ফেব্রুয়ারি থেকে দ্বীপটিতে পর্যটক ভ্রমনে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওই সিদ্ধান্ত মতে কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি রয়েছে (৩১ জানুয়ারি) পর্যন্ত। দ্বীপের বাসিন্দা, পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী এটি ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় বাড়ানোর দাবি জানালেও এ পর্যন্ত সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এ নিয়ে কক্সবাজার নাগরিক ফোরামের সভাপতি আ. ন. ম. হেলাল উদ্দিন উচ্চ আদালতে একটি রিট আবেদন করেন। গত (২৮ জানুয়ারি) দিন ধার্য থাকলে ওই রুটের শুনানি অনুষ্টিত হয়নি। তবে আদালত পরবর্তীতে শুনানির জন্য আগামী (৪ ফেব্রুয়ারি) দিন ধার্য করছেন।
এখন ওই শুনানির উপর নির্ভর করছে চলতি বছরে পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে শেষ যাত্রা (৩১ জানুয়ারি) হতে যাচ্ছে কিনা?