ফরিদপুরে স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষের নেতৃত্ব দেওয়া দুই নেতার বাড়িসহ অন্তত ত্রিশটি বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
আহত হয়েছে অন্তত ৮ জন। এর মধ্যে তিনজনকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের ফুসরা গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ফুসরা গ্রামটি কানাইপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডে অবস্থিত। এতে একটি পক্ষের নেতৃত্ব দেন আক্কাস মাতুব্বর। তিনি ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন হাশেম খান। তিনি ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে এলাকার একটি পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে দুই পক্ষের দুই সমর্থকের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে রাতেই ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পরিদর্শক তদন্ত জাফর ইকবাল ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি দুই পক্ষের কাছ থেকে এ নিয়ে কোন সংঘর্ষে জড়াবেন না বলে প্রতিশ্রুতি নেন।
এলাকাবাসীরা জানায়, এ প্রতিশ্রুতি আক্কাস মাতুব্বর মেনে নিলেও হাশেম খান গোপনে গোপনে সংঘাতের প্রস্তুতি নেন। এদিকে, আজ সকালে হাসেম খানের সমর্থকরা আক্কাস মাতুব্বরের বাড়িসহ তার সমর্থকদের বাড়িঘরে হামলা করে ভাঙচুর করে এবং গরু-ছাগল লুটপাট করে। পরে আক্কাস মাতুব্বরের সমর্থকরা সংগঠিত হয়ে হাসেম খানের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
এ সময় অন্তত ৩০টি বাড়িতে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। অনেক বাড়ি থেকে গরু-ছাগল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনায় আটজন আহত হন। এর মধ্যে তিনজনকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ, সেনাবাহিনীর সদস্য এবং র্যাব এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
কানাইপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন জানান, আক্কাস মাতুব্বর এবং হাসিম খানের মধ্যে এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। আক্কাস মাতুব্বর ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং হাশেম খান ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি।
এ বিষয়ে আক্কাস মাতুব্বর জানান, রোববার রাতে পুলিশের মধ্যস্থতায় আমরা সংঘর্ষে লিপ্ত হব না বলে কথা দিয়েছিলাম। আমি তা মেনে নিলেও হাসেম খান তা মানেননি। আজ সকালে তার সমর্থকরা অতর্কিত আমার বাড়িসহ আমার সমর্থকদের বাড়িতে হামলা করে ভাঙচুর ও গরু-ছাগল লুটপাট করেছে।
এদিকে, অভিযোগ অস্বীকার করে হাসেম খান জানান, আক্কাসের সমর্থকরা আমার বাড়িতে হামলা করেছে ভাঙচুর করেছে।
ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদ উজ্জামান জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং র্যাবসদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি বলেন, এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে বিকেল পর্যন্ত থানায় কোন পক্ষ কোনো অভিযোগ দেয়নি।