
ছবি- বাঁয়ে সঞ্চয় রায়, ডানে- ডানে আহত মিজানুর রহমান মিজান ওরফে মিলন
নোয়াখালীর কবিরহাটে কলেজ ছাত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় ছাত্রীর বাবাকে মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়েছে।
হামলায় আহত ওই ছাত্রীর বাবা মিজানুর রহমান মিজান ওরফে মিলনকে (৫৫) মাথায় অপারেশন করার পর তিনি এখনো ঢাকা চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। পেশায় তিনি একজন ব্যবসায়ী। অপরদিকে, অভিযুক্ত সঞ্চয় রায় (২৫) একই এলাকার দেবরাজ রায়ের ছেলে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে উপজেলার নরোত্তমপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মির্জানগর গ্রামে কুপিয়ে জখম করার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার মিলনের ছোটভাই ফরিদ অভিযোগ করেন, বড়ভাই মিলনের উপজেলার কবিরহাট বাজারে একটি ইলেকট্রিক দোকান রয়েছে। ব্যবসার পাশাপাশি তিনি ইলেকট্রিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার মেয়ে নোয়াখালী সরকারি কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। ১৫-২০ দিন আগে বিকেলে বড়ভাইয়ের মেয়ে আমাদের পুরান বাড়ি থেকে নতুন বাড়ি যাওয়ার পথে সঞ্চয় তার গতিরোধ করে টানাটানি শুরু করে। ভয়ে তখন সে কাউকে কিছু জানায়নি। ওই দিন থেকে সঞ্চয় নানাভাবে তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে।
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, বড় ভাইয়ের মেয়ের কাছে পাত্তা না পেয়ে ওই যুবক চাচাতো বোন স্থানীয় নরোত্তমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত শুরু করে।
এরপর বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) রাতে বসতঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে সঞ্জয় অশ্লীল কথাবার্তা বলে জানলায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। ছাত্রীর দাদি বিষয়টি আঁচ করতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘরের বাইরে এসে সঞ্চয়কে হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এরপর সে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়।
মেয়েদের যৌন হয়রানির ঘটনার জের ধরে শুক্রবার (৭ মার্চ) রাত ১০টার দিকে আমার বড়ভাই মিলন সঞ্চয়ের ঘরের সামনে গিয়ে তার অপকর্মের বিষয়গুলো তার বাবাকে জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সঞ্চয় ঘর থেকে চাইনিজ কুড়াল নিয়ে এসে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করে। একপর্যায়ে সঞ্চয়ের চাইনিজ কুড়ালের কোপে বড়ভাই মিলনের মাথা কেটে যায়। বর্তমানে বড়ভাই মিলন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওই সময় বড়ভাই মিলনকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে ছোটভাই ফরিদের ওপরও হামলা চালানো হয়। এমনকী তার চিৎকার শুনে এগিয়ে এলে ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুবও হামলার শিকার হন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে অভিযুক্ত সঞ্চয় ও তার বাবাকে পাওয়া যায়নি। সরেজমিন জানা যায়, ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবারের সদস্যরা পলাতক রয়েছেন।
এ বিষয়ে কবিরহাট থানার ওসির দায়িত্বে থাকা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মঞ্জুর আহমদ বলেন, এ রকম একটা সংবাদ আমরা পেয়েছি। তবে কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ করেননি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।