
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণের মামলার প্রধান আসামি ভুক্তভোগী শিশুর বোনের শ্বশুরের সাত দিন এবং স্বামী, শাশুড়ি ও ভাসুরের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আসামিদের পক্ষে কোনো আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেননি। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিলে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন আসামিরা। রিমান্ড না দেওয়ারও দাবি করেন তাঁরা।
রোববার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত ১২টার পর মাগুরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আব্দুল মতিনের আদালত তাঁদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। নিরাপত্তা শঙ্কা থাকায় আসামিদের দিনে আদালতে হাজির করতে পারেনি পুলিশ। মধ্যরাতে তাদের আদালতে নেওয়া হয়।
জানা গেছে, রোববার দিবাগত রাত ১২টার পর শুরু হয় রিমান্ড শুনানি। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার পরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন (তদন্ত) সকল আসামিদের সাত দিন করে রিমান্ড আবেদন করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তার পক্ষ থেকে জানানো হয়, ভুক্তভোগী শিশু অচেতন থাকায় জবানবন্দি নেওয়া যায়নি। উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলার মূল অভিযুক্তের সাত দিন ও অন্য তিন আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
নাম না প্রকাশের শর্তে মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ‘রিমান্ডের আবেদনসহ অন্যান্য কাগজপত্র তৈরি থাকলেও রোববার দিনে আসামিদের আদালতে হাজির করার ঝুঁকি নেওয়া যায়নি। দিনভর আন্দোলনকারীরা আদালতের ফটক ঘিরে রেখেছিল। আসামিদের তাঁদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলছিল। এ কারণে মধ্যরাতে শুনানি করেছেন আদালত।’
এর আগে, শনিবার শিশুটির মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। এতে শিশুটির বোনের স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাসুরকে আসামি করা হয়েছে। তাঁরা আগে থেকেই পুলিশের হেফাজতে ছিলেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বোনের স্বামী, শাশুড়ি ও ভাসুরকে শনিবার বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়। আর শুক্রবার কারাগারে পাঠানো হয় বোনের শ্বশুরকে।
এদিকে, ভুক্তভোগী শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) বা শিশু নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রোববার দিবাগত রাত ১টার দিকে এক খুদে বার্তায় এই তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।
এর আগে, শনিবার (৮ মার্চ) মাগুরা সদর উপজেলায় ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (ঢামেক) থেকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচে) নেওয়া হয়।
মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ৫ মার্চ বুধবার রাত ১০টার দিকে খাবার খেয়ে বড় বোন ও তাঁর স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমায় শিশুটি। রাতে শিশুটির দুলাভাইয়ের (বোনের স্বামী) সহযোগিতায় তার বাবা তার মুখ চেপে ধরে কক্ষে নিয়ে ধর্ষণ করেন। সে চিৎকার করতে গেলে তার গলা চেপে ধরা হয়। পরে তাকে আবার বোনের কক্ষের মেঝেতে ফেলে রেখে যায়। এরপর অসুস্থ হলে পরদিন বেলা ১১টার দিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় শিশুটিকে।