
ইজারা নিয়ে নোয়াখালীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত ১২
নোয়াখালীর কবিরহাটে হাটবাজার ইজারার দরপত্র মূল্যায়ন শেষে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দুই পক্ষের ভাষ্যমতে, এতে দুই পক্ষেরর অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূদম পুষ্প চাকমার কার্যালয়ের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারি কবিরহাট উপজেলার বার্ষিক হাটবাজার ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেয় উপজেলা প্রশাসন। এরপর সিডিউল ক্রয় করে অনেক নতুন ও পুরাতন দরদাতা দরপত্র জমা দেন।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই দরপত্র মূল্যায়ন শেষে বাজার ইজারার প্রথম ধাপের কার্যক্রম সমাপ্তি করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূদম পুষ্প চাকমা। দরপত্র মূল্যায়ন শেষে সর্বোচ্চ দর ২৩ লাখ টাকায় উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের আমিন বাজারের ইাজারা পায় নতুন দরদাতা চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল হাসান আকাশ।
এ নিয়ে ইউএনও কার্যালয় থেকে বের হলে আমিন বাজারের পুরনো ইজারাদার বিএনপি নেতা ধনু মেম্বার ও তার ছেলে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব সুজন অনুসারীদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরবর্তীতে তারা ইউএনও কার্যালয়ের সামনে দুইপক্ষই প্রথমে বাগবিতণ্ডা ও পরে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।এরপর উপজেলা পরিষদের মাঠে তাদের মধ্যে ফের সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আহতদের ২শ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালসহ স্থানীয় একাধিক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল হাসান আকাশ বলেন, আমি কোনো দলের পরিচয়ে ইজারা পাইনি। ইজারা না পেয়ে ধনু মেম্বার ও তার ছেলে যুবদল নেতা সুজন গায়ে পড়ে মারামারি করতে চেয়েছে। এতে আমার একজন লোকের হাত ভেঙে যায় এবং আরো কয়েকজন আহত হয়।
অপরদিকে, ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মো. সুজনের ছোটভাই সাবেক ছাত্রদল নেতা মিরাজুল ইসলাম মিরাজ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, আমাদের প্রায় ৯-১০ জন লোক প্রতিপক্ষের লোকজনের হামলায় আহত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ২শ ৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে কবিরহাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা লিটন চৌধুরীর মোবাইলফোনে একাধিক কল করা হলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি। সে কারণে এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া বলেন, ইজারা এক পক্ষ পেয়েছে, আরেক পক্ষ পায়নি। এটা নিয়ে মনোমালিন্য ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে বের করে দেয়। অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, এটা নিয়ে মনে হয় অভিযোগ পড়বে।
কবিরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূদম পুষ্প চাকমা বলেন, দরপত্র মূল্যায়নে অনেক মানুষ এসেছেন। দরপত্র মূল্যায়ন শেষে জটলা হয়েছে। তখন আমি আমার অফিসে ছিলাম। তবে মারামারির কোনো ঘটনা দেখিনি।
হাটবাজার ইজারার প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষ হয়েছে বলেও জানান তিনি জানান।