
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ঈদের জামাত শেষে মোনাজাতে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না-করায় ইমামকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় যুবদলের এক নেতা।
সোমবার (৩১ মার্চ) কাশীপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহের দ্বিতীয় জামাতের পর ঘটে এ ঘটনা ঘটে।
এ জামাতে ইমামতি করেন- চরকাশীপুরের আঞ্জুবাহার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হক। ফেসবুকে তিনি এক পোস্টে অভিযোগ করেন, ঈদের নামাজ শেষে মোনাজাতে খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না-করায় তাকে হেনস্তা করেছেন ফতুল্লা থানা যুবদলের সাবেক সহসম্পাদক সৈকত হাসান ইকবাল। এ পোস্টের নিচে অনেকে যুবদল নেতার এ আচরণের জন্য নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
এ বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার পৌনে ৮টার দিকে কাশীপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে দোয়ায় ইমাম দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় দোয়া করেন। শারীরিকভাবে অসুস্থ সবার সুস্থতা কামনা করেন। দোয়া শেষে ইমাম ইমদাদুল হককে ঘিরে ধরেন যুবদল নেতা সৈকত হাসান ইকবাল ও তার অনুসারীরা। অনুরোধের পরেও মোনাজাতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ করে দোয়া না-করায় ক্ষুব্ধ হন ইকবাল। এ সময় তিনি ইমামের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে মুসল্লিদের প্রতিবাদের মুখে যুবদল নেতা ও তার অনুসারীরা সেখান থেকে চলে যান।
যোগাযোগ করা হলে মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হক বলেন, নামাজ শুরু আগে বিএনপি-সমর্থক স্থানীয় এক ব্যক্তি (যিনি ঈদগাহ কমিটিরও সদস্য) আমাকে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা দোয়া করতে অনুরোধ জানান। কিন্তু আমি দোয়ায় অসুস্থ সবার আরোগ্য কামনা করি। বিশেষ কারো নাম উল্লেখ করিনি। এটি আম-মজলিস। এখানে সব দলের লোকই আছেন। সে কারণে বিতর্ক এড়াতে নির্দিষ্ট দলের কারো নাম উল্লেখ করা উচিত হবে না ভেবেই তা করিনি। তাছাড়া, উনি (খালেদা জিয়া) রাষ্ট্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদেও নেই। সুতরাং তার নাম উল্লেখ করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। আমি সবার রোগমুক্তি কামনা করেছি। কিন্তু নামাজ শেষে যুবদল নেতা ইকবাল আমার চাকরি খেয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন।
তার অনুরোধের পরও কেন তার নাম নিইনি সেজন্য তিনি আমার দিকে তেড়ে আসেন। মুসল্লিরা প্রতিবাদ জানালে তিনি চুপ মেরে যান।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে যুবদল নেতা সৈকত হাসান ইকবালের সঙ্গে যোগাযাগ করা হলে তিনি বলেন, আমি তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করিনি। আমি তাকে শুধু বললাম, অনুরোধের পরেও কেন আপনি খালেদা জিয়ার নাম নিলেন না! তিনি জানালেন- তিনি বাধ্য না। তখন তিনি কোথায় চাকরি করেন, জানতে চাই। জানলাম, তিনি যে মসজিদে চাকরি করেন, সেই মসজিদের সভাপতি আমাদের ছোটভাই। তবে আমি চাকরিচ্যুত করার কোনো কথা বলিনি।