
বাগেরহাটের চিতলমারীতে বহুতল বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে এক নারী নিহত ও অর্ধশত আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।ওই নারীর নাম অনীতা রায় (৪৫)। ফায়ার সার্ভিস, সেনা বাহিনী সদস্য, পুলিশ ও স্থানীয় জনসাধারণের চার ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ধারণা করা হচ্ছে, ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিক কিছু জানা সম্ভব হয়নি বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়।
সোমবার (৭ এপ্রিল) সকালে উপজেলা সদরে অবস্থিত ‘মাইশা টাওয়ার’ নামে পাঁচতলা একটি ভবনে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মৃত অনীতা রায় কাটাখালি দেবুদাসের স্ত্রী। ফায়ার সার্ভিস ধারণা করছে, তিনি ধোঁয়ার কারণে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। ভবনটিতে সোনালী ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক ও ব্যাংক এশিয়াসহ চারটি ব্যাংকের শাখা, বিভিন্ন কোম্পানির শোরুম এবং একটি বেসরকারি ক্লিনিক রয়েছে। নিচতলায় একাধিক দোকান রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা হালিম হোসেন বলেন, সোমবার সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ ধোঁয়া বের হতে দেখে আমরা দৌড়ে বাইরে বেরিয়ে যাই। মানুষ চিৎকার করতে থাকেন। কেউ কেউ জানালা দিয়ে নামছেন, কেউ দেখি আবার নিচে লাফ দিচ্ছেন। আরেক বাসিন্দা রফিক মোল্লা বলেন, সেনাবাহিনী আর ফায়ার সার্ভিস না এলে আরো বড় ক্ষতি হতো। আমরা নিজেরাও বলতি নিয়ে পানি দিয়েছি আগুন নেভাতে।
চিতলমারী সেনাক্যাম্পের ক্যাপ্টেন মো. রায়হান বলেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজে অংশ নেয়। ভবনের চতুর্থ তলায় অবস্থিত একটি বেসরকারি ক্লিনিক থেকে রোগীদের নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়।
খুলনা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বিভাগের উপপরিচালক মো. মতিউর রহমান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ভবনের নিচতলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে তা তৃতীয়তলা পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। গোপালগঞ্জ, খুলনা ও বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করেছে। ভবন থেকে আটকে পড়া একজন নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ধোঁয়ার কারণে তিনি মারা গেছেন। আগুন লাগার সঠিক কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই বলা সম্ভব হচ্ছে না।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল আহসান বলেন, আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ব্যাংকগুলো মোটামুটি অক্ষত রয়েছে। এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। এটা ধোঁয়ার কারণে হতে পারে। আগুন নির্বাপণ ও উদ্ধার কাজে সেনাবাহিনী, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় বাসিন্দারা কাজ করছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পরে জানানো হবে।