
চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত এক হাজার শয্যার মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল বরিশাল বিভাগের ঐতিহ্যবাহী উপজেলা নলছিটিতে স্থাপনের দাবিতে গণজমায়েত ও মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা বলছেন, দক্ষিণবঙ্গ চিকিৎসাসেবার দিক থেকে বরবরাই অবহেলিত। তাই চীনের এই হাসপাতাল নলছিটিতে স্থাপন হলে দক্ষিণবঙ্গের ২২ জেলাসহ সারাদেশের মানুষ বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা পাবেন। এই দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়া হবে।
বৃহস্পতিবার নলছিটি উপজেলার মার্চেন্টস হাইস্কুলের সামনে সচেতন নাগরিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ গণ জমায়েতে অংশ নেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, 'চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে একটি তিনটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা রয়েছে। আমরা মনে করি, নলছিটিই এ হাসপাতাল স্থাপনের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত স্থান। একটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল এখানে হলে ভুটান, নেপাল ও চীনের ছাত্র-ছাত্রীরা এখানে পড়াশোনা করতে আসবেন। চিকিৎসাসেবা নিতে আসবেন। এখানকার মানুষও বিশ্বমানের চিকিৎসাসেবা পাবেন।
বক্তারা আরো বলেন, প্রস্তাবিত হাসপাতালের একটি ইতোমধ্যে রংপুর বিভাগে হওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাকি ২টির একটি বরিশাল বিভাগে প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানাচ্ছি। নদীমাতৃক বরিশালে চীনের প্রস্তাবিত হাসপাতাল করলে অবহেলিত দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলাসহ সারা দেশের মানুষ উপকৃত হবে।
তারা বলেন, ২২টি জেলার মানুষের আবাসভূমি দক্ষিণ অঞ্চল আজও স্বাস্থ্যসেবাসহ সার্বিকভাবে থেকে গেছে অবহেলিত, বঞ্চিত ও উপেক্ষিত। একটি আধুনিক ও সুসজ্জিত হাসপাতাল এখানে শুধু দরকারই নয়, এটি এখন সময়ের দাবি।
তাছাড়া বরিশালে হাসপাতাল হলে দেশের অনেক সুবিধাও হবে। সড়কে যানজট এখন আতঙ্কের নাম, যা দেশের সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে হিমশিম খাচ্ছে। বরিশালে হাসপাতাল হলে এই ২২ জেলার প্রায় ৬ কোটি মানুষের সমাগম ঢাকা শহরে হবে না। ফলে যানজট কিছুটা হলেও কমবে। তাছাড়া অর্থনৈতিক খাতেও অনেক লাভবান হওয়া যাবে।
দক্ষিণ অঞ্চল মানুষ উন্নত চিকিৎসা ও সম্মানজনক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার অধিকার রাখে বলে দাবি জানান বক্তারা। তাই আমরা চীনের প্রস্তাবিত ১ হাজার শয্যার আধুনিক হাসপাতালটি দক্ষিণ অঞ্চল তথা বরিশালের নলছিটিতে স্থাপনের জন্য জোরালো দাবি জানাই।
এর আগে ১৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, বাংলাদেশে পর্যায়ক্রমে তিনটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল তৈরি করবে চীনা বিনিয়োগকারীরা। তিস্তা প্রকল্পের আওতায় চীনের উপহারের হাসপাতাল বাংলাদেশের সঙ্গে ৫০ বছরের কূটনীতিক সম্পর্ক উপলক্ষে ১ হাজার শয্যাবিশিষ্ট তিনটি হাসপাতাল উপহার দেবে চীন সরকার। সেটি দেশের রংপুরে তৈরি করা হতে পারে এবং ১২ একর জায়গা নিয়ে স্থাপিত হবে এই হাসপাতালটি।