ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

পাঁচ মাস ধরে সিলেট মেডিক্যালের ২৪২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বন্ধ

বিবিধ

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২০:৪০, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

আপডেট: ২০:৪০, ২৭ এপ্রিল ২০২৩

সর্বশেষ

পাঁচ মাস ধরে সিলেট মেডিক্যালের ২৪২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন বন্ধ

টানা পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪২ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনায়ই বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে। যদিও ইউজিসি বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়টির অনুমোদিত পদগুলোর বিপরীতে বেতন-ভাতার অর্থ নিয়মিত ছাড় করা হচ্ছে। এদিকে সব কর্মীর বন্ধ থাকলেও নিয়মিত বেতন পাচ্ছেন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার। 

জানা যায়, দেশের চতুর্থ চিকিৎসাবিষয়ক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে যাত্রা করে সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়। ওই বছরের নভেম্বর ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সাবেক অধ্যক্ষ মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য নিয়োগ দেয়া হয়। তার মেয়াদ শেষ হলেও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়টির নিজস্ব ক্যাম্পাস নির্মাণের কাজই শুরু করা সম্ভব হয়নি। শুরু হয়নি নিজস্ব শিক্ষা কার্যক্রমও। প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে গতি না আনতে পারলেও বিতর্কিতভাবে প্রচুর শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী অ্যাডহক (অস্থায়ী) ভিত্তিতে নিয়োগ দেয় তৎকালীন কর্তৃপক্ষ। সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে ও অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে সর্বমোট ২৪২ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তবে সে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠলে তদন্ত করে এর প্রমাণ পেয়েছে ইউজিসি।

এদিকে তদন্ত প্রতিবেদনের সুপারিশ ও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কথা বলে গত ডিসেম্বর থেকে বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর।

ইউজিসি যদিও বলছে, তারা সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধের সুপারিশ করেনি। শুধু যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর নিয়োগে অনিয়মের প্রমাণ মিলেছে তাদের ক্ষেত্রে এ সুপারিশ করা হয়। এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘কমিশনের তদন্তে যেসব নিয়োগ নিয়মবহির্ভূতভাবে হয়েছে বলে প্রমাণিত হয়েছে, সে বিষয়ে ওই নির্দেশনা দেয়া হয়। তবে যাদের নিয়ম অনুসরণ করে নিয়োগ দেয়া হয় সে বিষয়ে এমন কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি। আর কমিশন থেকে অনুমোদিত পদগুলোর বিপরীতে প্রতি মাসেই অর্থ ছাড় করা হচ্ছে, যা তাদের তহবিলে জমা হচ্ছে।’

কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশের অভিযোগ, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. ফজলুর রহমানের নিয়োগের পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ধরনের অসন্তোষ শুরু হয়েছে। তার নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়েও রয়েছে অনিয়মের অভিযোগ। কিন্তু তিনি ঠিকই বেতন তুলছেন। তারা বলছেন, প্রাক্তন উপাচার্যের মেয়াদকালে প্রায় ৭০ জন লোকবল নিয়োগের চেষ্টা করেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আবুল কালাম মো. ফজলুর রহমান। কিন্তু তৎকালীন উপাচার্য মোর্শেদ আহমদ চৌধুরী তাতে সাড়া দেননি। তাই মো. ফজলুর রহমান অনেকটা প্রতিশোধ নিতে মোর্শেদ আহমদ চৌধুরীর আমলে নিয়োগপ্রাপ্তদের বেতন-ভাতা বন্ধ করে রেখেছেন। 

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা বন্ধ থাকায় বেশ বিপাকে পড়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। বিশেষ করে নিম্ন পর্যায়ের কর্মচারীরা পার করছেন মানবেতর জীবন। এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় কিংবা ইউজিসির কোনো নির্দেশনাতেই সবার বেতন-ভাতা বন্ধের নির্দেশনা দেয়া হয়নি। আর সবার বেতন বন্ধ হলে রেজিস্ট্রার স্যারের বেতন হচ্ছে কীভাবে! এটা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি করা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। দ্রুত এর সমাধান না করলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবেন। ঈদের মতো একটি বড় উৎসব সামনে থাকা সত্ত্বেও রেজিস্ট্রার স্যার সমস্যার সমাধান না করে দেশের বাইরে চলে গেলেন। এটা কোনোভাবেই দায়িত্বশীল আচরণ হতে পারে না।’ 

সিলেট মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. এএইচএম এনায়েত হোসেন বলেন, ‘আমি উপাচার্য পদে নিয়োগ পাওয়ার আগ থেকেই সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। আমাকে জানানো হয়েছে, মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির একটি নির্দিষ্ট নির্দেশনার আলোকে তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ রয়েছে। আমার পক্ষে এর চেয়ে বেশি কিছু মন্তব্য করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে প্রাক্তন উপাচার্য ও রেজিস্ট্রার ভালো বলতে পারবেন।’

জনপ্রিয়