বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি আইন বাতিল চায় ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। সংগঠনটি বলছে, এটি একটি ‘দায়মুক্তি আইন’। এ আইনের আওতায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সরকার যা খুশি, তা-ই করতে পারবে। দরপত্র ছাড়াই যেকোনো চুক্তি করতে পারবে। সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে আদালতেও যাওয়া যাবে না।
‘জ্বালানিসঙ্কট ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন’ শীর্ষক এক সেমিনারে গত শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এসব কথা বলেছে ক্যাব। এতে জ্বালানি খাতের সংস্কার প্রস্তাব তুলে ধরে ১৩ দফা দাবি জানানো হয়। এ দাবির শুরুতেই প্রতিযোগিতাহীন যেকোনো আইন নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়। দাবি আদায়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে তোলার কথা জানান রাজনীতিবিদ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ড. বদরূল ইমাম বলেন, সম্প্রতি যেসব গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার হয়েছে সবগুলো করেছে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স। সেই প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা অবান্তর। ইউএসজিএস তাদের এক সার্ভে রিপোর্টে বলেছে, বাংলাদেশে আরও ৩২ টিসিএফ গ্যাস অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে। বর্তমানে বছরে ১ টিসিএফ গ্যাস ব্যবহৃত হচ্ছে সে হিসেবে আরও ৩২ বছরের মজুদ রয়েছে। দেশীয় গ্যাসের অনুসন্ধান কার্যক্রম সঠিক গতিতে না হওয়ায় আজকের এ সঙ্কট। অচলাবস্থার কারণেই চড়া দামে এলএনজি আমদানি করতে হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, সরকার দুই বছরে ৪৬টি কূপ খননের উদ্যোগ নিয়েছে। ভালো উদ্যোগ। আশা করি আগের ১০৫টি কূপ খনন প্রকল্পের মতো হারিয়ে না যায়। বঙ্গোপসাগরে আমাদের সীমানার ওপারে মিয়ানমার অনেক গ্যাস উত্তোলন করছে। অথচ আমরা গত ১০ বছরে কিছুই করতে পারিনি। জ্বালানি প্রাকৃতিক সম্পদ, আর যেহেতু সংবিধান অনুযায়ী প্রাকৃতিক সম্পদের মালিক জনগণ এমন মন্তব্য করে অধ্যাপক এমএম আকাশ বলেন, সংবিধান বলেছে তিন ধরনের মালিকানা অনুমোদনযোগ্য। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান হতে হবে দেশীয় উদ্যোগ, বিদেশি থাকতে পারে সম্পূরক হিসেবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ক্যাবের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি অভিযোগ অনুসন্ধান এবং গবেষণা কমিশনের সদস্য অধ্যাপক সুশান্ত কুমার দাস, ক্যাবের সদস্য স্থপতি ইকবাল হাবিব, ক্যাবের আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া প্রমুখ।