ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪ , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

ভয়ে সেন্টমার্টিন ছাড়ছে মানুষ

জাতীয়

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৫:৫৬, ১২ মে ২০২৩

সর্বশেষ

ভয়ে সেন্টমার্টিন ছাড়ছে মানুষ

প্রবল ঘূর্ণিঝড় থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে ‘মোকা’। শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সেন্টমাটিন দ্বীপের আকাশে মেঘ দেখা গেছে।

শুরু হয়েছে বাতাস। সকালে দ্বীপ থেকে কাঠের ট্রলারে প্রায় পাঁচশ’ মানুষ সেন্টমাটিন ছাড়েন।

সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদীন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকার ভয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপ ছাড়তে শুরু করেছেন বাসিন্দারা। আজকে প্রায় পাঁচশ’ মানুষ দ্বীপ ছাড়ছেন। মূলত স্বচ্ছল পরিবারের লোকজন দ্বীপ ছাড়ছেন। যারা এখনও বসতভিটায় রয়েছেন তারাও আছেন ভয়ে।

এদিকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্বীপের মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি সাগরের বুকে জেগে ওঠা এই প্রবাল দ্বীপসহ মিয়ানমার সীমান্তবর্তী নাফ নদের তীরে অবস্থিত শাহপরীর দ্বীপে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুহাম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপে আমরা বিশেষ নজর রাখছি। তবে এখনও মানুষ সরিয়ে নেওয়ার মতো সময় হয়নি। কিন্তু দ্বীপে আমরা আশ্রয়কেন্দ্রসহ সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন বলছে, ঘূর্ণিঝড় মোকা থেকে বাঁচতে কক্সবাজারের টেকনাফে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বিশেষ করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে লোকজনকে সচেতনতার পাশাপাশি সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। এ দুর্যোগে স্থানীয়দের জন্য উপজেলায় সরকারি-বেসরকারি ৮৭টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ শতাধিকের বেশি হোটেল-মোটেল ও ডাকবাংলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। বিশেষ জোন হিসেবে সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপের জন্য নৌবাহিনীসহ বিজিবি, পুলিশ, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিমসহ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া সাগরে মাছ শিকার জেলেদেলের কূলে ফিরে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে।

সেন্টমার্টিন হাই স্কুলের সহকারী শিক্ষক আয়াত উল্লাহ খোমেনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোকার ভয়ে দ্বীপের স্বাবলম্বী অনেকে টেকনাফে চলে গেছেন। যারা আছেন তাদের অনেকে ভয়ে আছেন। সকাল থেকে দ্বীপের আকাশ মেঘ হয়ে আছে। বাতাসও শুরু হয়েছে। আমরা প্রত্যেক গ্রামে সবাইকে সর্তক করছি।

সকালে পরিবারের মালামাল ও পাঁচ সদস্যকে নিয়ে দ্বীপ ছাড়েন মদিনা বেগম। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় আসছে তাই টেকনাফে স্বজনদের কাছে চলে যাচ্ছি। কেননা এর আগে আমার আশপাশের অনেক লোকজন দ্বীপ ছেড়ে চলে গেছেন।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামরুজ্জামান বলেন,সাগরের বুকে জেগে উঠা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমাদের থেকে সেটি বিচ্ছিন্ন। তাই দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্বীপের জন্য আমাদের নৌবাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে। পাপাশি দ্বীপে বিজিবি, পুলিশ, কোস্ট গার্ড সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছেন।

তিনি বলেন, সেন্টমাটিন ও শাহপরীর দ্বীপে হোটেল-মোটেল ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। হটলাইন খোলা হয়েছে। বিশেষ করে দুই দ্বীপের (সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপে) বাসিন্দাদের সচেতনতার পাশাপাশি আশ্রয়কেন্দ্রে আসার জন্য আগে থেকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

ইউএনও আরও বলেন, পরিস্থিতি বুঝে প্রয়োজনে তাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় আশ্রয় কেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হবে। বিশেষ করে দ্বীপের লোকজন যাতে আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রীর ব্যবস্থা রয়েছে। স্কুল, আবহাওয়া অফিস, ডাকঘর, হোটেলগুলো খোলা রাখতে বলা হয়েছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার সেই পরিস্থিতি এখনও হয়নি। তবে দ্বীপবাসীকে সতর্ক থাকতে প্রত্যেক গ্রামে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে। দ্বীপে আশ্রয়কেন্দ্রসহ হোটেলগুলোর পাশাপাশি দ্বীপে সিপিপির ১৩ শ’ স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কিছু লোক দ্বীপ ছেড়ে গেছে বলে শুনেছি।

দুর্যোগ মোকাবিলায় দ্বীপে বিজিবি সদস্যদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে জানিয়ে টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, যেকোনো দুর্যোগে দ্বীপবাসীর জন্য বিজিবি সব সময় কাজ করে যাচ্ছে। এটি সুপার সাইক্লোনে রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তাই সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপকে বিশেষ নজরদারিতে রাখছি। আমরা দুর্যোগ মোকাবিলায় সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রয়েছি। 

জনপ্রিয়