চণ্ড গতি নিয়ে মিয়ানমার উপকূলে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। ঝড়ের কবল থেকে বাঁচতে দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ আশ্রয় খুঁজছে মঠ, প্যাগোডা এবং স্কুলগুলোতে। এ পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। দেশটির আবহাওয়া বিভাগের বরাতে বার্তা সংস্থা এপি জানিয়েছে, মোখার কেন্দ্রটি রোববার (১৪ মে) বিকেলে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সিটওয়ে শহরের কাছে ২০৯ কিলোমিটার বাতাসের গতি নিয়ে আছড়ে পড়ে।
মিয়ানমারের সামরিক তথ্য অফিস জানিয়েছে, ঝড়ের কারণে সিটওয়ে, কিয়াউকপিউ এবং গওয়া শহরে ঘরবাড়ি, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, সেল ফোন টাওয়ার, নৌকা এবং রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুন থেকে প্রায় ৪২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমের কোকো দ্বীপপুঞ্জে অসংখ্য ভবনের ছাদ উড়ে গেছে।
সিটওয়ের একটি আশ্রয়কেন্দ্রের স্বেচ্ছাসেবী টিন নিন ওও জানান, সিটওয়ের তিন লাখ বাসিন্দার মধ্যে চার হাজারেরও বেশি লোককে অন্য শহরে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং ২০ হাজারেরও বেশি লোক শহরের বিভিন্ন মঠ, প্যাগোডা এবং স্কুলের মজবুত ভবনগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ অঞ্চলে ঝড় এখনও প্রবেশ করেনি, তাই আমাদের এখানে খুব একটা অসুবিধা নেই। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে অনেক মানুষ আসলেও এখানে পর্যাপ্ত টয়লেট নেই।
স্থানীয় একটি দাতব্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লিন লিন বলেছেন, প্রত্যাশার চেয়ে বেশি লোক আসার পরে সিটওয়েতে আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত খাবার সংকট দেখা দিয়েছে।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচির প্রতিনিধি টিটন মিত্র এক টুইট বার্তায় জানান, মিয়ানমারের উপকূলীয় অঞ্চলে মোখা আঘাত হেনেছে। ঝুঁকিতে রয়েছে ২০ লাখ মানুষ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে রোববার সকালে মিয়ানমারে ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে বেশ কয়েকজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় শান রাজ্যের একটি উদ্ধারকারী দল ফেসবুকে জানিয়েছে যে, তারা এক দম্পতির মৃতদেহ উদ্ধার করেছে যারা টাচিলেক শহরে ভারী বৃষ্টির কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে চাপা পড়েন।
এছাড়া স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মধ্য মান্দালয় অঞ্চলের পাইন ও লুইন শহরে একটি বটগাছ পড়ে গেলে একজন ব্যক্তি পিষ্ট হয়ে মারা যান। সিটওয়েতে একাধিক ভবর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দের মে মাসে, ঘূর্ণিঝড় নার্গিস মিয়ানমারের ইরাবদি নদীর আশেপাশের এলাকাগুলো ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। সেসময় প্রায় এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ মারা যায় এবং কয়েক হাজার বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।