ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ , ১৪ চৈত্র ১৪৩০ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

শেখ হাসিনার ফিরে আসা এবং আজকের বাংলাদেশ

মতামত

দুলাল আচার্য

প্রকাশিত: ০০:০০, ১৭ মে ২০২৩

সর্বশেষ

শেখ হাসিনার ফিরে আসা এবং আজকের বাংলাদেশ

সময়টা ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে। ঢাকার রাজপথে নেমেছিলো জনতার ঢল। সবার দৃষ্টি ছিলো কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে। রাস্তার দুই ধারে লাখো মানুষের খণ্ড-খণ্ড মিছিল। নানা প্রকার যানবাহনের সারিবদ্ধ শোভাযাত্রা। উপলক্ষ্য, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন পর ঢাকায় আসছেন। এক রিকশাচালকের উক্তিÑ দেইখ্যা আসেন কুর্মিটোলা এয়ারপোর্ট, শেখের বেটির লাগি কাতারে কাতারে মানুষ জমছে সকাল থাইক্যা। শেখ মুজিবুর যেই দিন ফিরছিল যুদ্ধের পর, এমুন মানুষ সেই দিনও হয় নাই। (সূত্র: সচিত্র সন্ধানী)
সচিত্র সন্ধানীর রিপোর্টের ভাষায়: বিমানবন্দরের কাছাকাছি অপেক্ষমাণ জনতার কোঁচড়ে মুড়ি-চিড়ার স্পষ্ট আভাস দেখা যাচ্ছিল। দূর থেকে যাত্রা করে এঁরা এসেছেন। অসুস্থ, রুগ্ণ, কিশোর-যুবক বাদ যাননি। সবার চোখ রানওয়ের দিকে। আসমানের অবস্থা দু’দিন ধরেই খারাপ যাচ্ছে। কী জানি কেমন যাবে আজকের দিন। কালো মেঘ জমছে। বিমানবন্দর ছেয়ে গেছে গাড়ি আর মানুষে। ভিআইপি লাউঞ্জে ঢোকার গেট, গেটের ওপর ছাদ, লোকে লোকারণ্য। মানুষের চিৎকার, কথা, ঠেলাধাক্কা সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দুতে শেখ হাসিনার আগমনবার্তা। 
কুর্মিটোলা বিমান বন্দর থেকে শেরেবাংলা নগর, জনস্রোতে মিশে প্রায় তিন ঘণ্টায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শেরেবাংলা নগরে পৌঁছালেন। সেদিন ঝড়বৃষ্টিতে নগরজীবন প্রায় বিপন্ন। রাস্তা-ঘাটে স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত হয়ে গেছে। তবে ঝড়-বৃষ্টি বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি জনতার ভালোবাসাকে উপেক্ষা করে। প্রাকৃতিক এই দুর্যোগ উপেক্ষা করে শেরেবাংলা নগরে তখন অপেক্ষায় লাখ লাখ মানুষ।
বিমানবন্দর থেকে সোজা মানিক মিয়া এভিনিউয়ে, সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গণসংবর্ধনায় বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাষ্পরুদ্ধ কণ্ঠে বলেছিলেন, ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই। আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি। আমি আপনাদের মাঝেই তাঁদেরকে ফিরে পেতে চাই।’ 
গণসংবর্ধনায় বঙ্গবন্ধু কন্যা আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ঘোষিত দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি বাস্তবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আমি জীবন উৎসর্গ করেতে চাই। আমার আর কিছু চাওয়া-পাওয়ার নেই। সব হারিয়ে আমি এসেছি আপনাদের পাশে থেকে বাংলার মানুষের মুক্তির সংগ্রামে অংশ নেওয়ার জন্য।’ আনন্দঘন ও হৃদয়বিদারক সমাবেশে কর্মীরা মুহুর্মুহু নানা স্লোগানে মুখরিত করে রেখেছিল: ‘শেখ হাসিনা কথা দিলাম, মুজিব হত্যার বদলা নেব’, ‘শেখ হাসিনা, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘ঝড়বৃষ্টি আঁধার রাতে, আমরা আছি তোমার সাথে’, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ । 
শেখ হাসিনা সেদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন। কর্মীদের চোখেও ছিল অশ্রুধারা। তখন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের জন্য সময়টা খুব খারাপ ছিল। পঁচাত্তরের খুনিরা তখনও তৎপর সব জায়গায়। খুনিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছিল স্বৈরশাসক জেনারেল জিয়া। এই বৈরি পরিবেশের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকন্যা পিতার পথ ধরে জীবনের সব ঝুঁকি নিয়ে শুরু করলেন বাংলার মানুষের মুক্তির সংগ্রাম। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শেখ হাসিনা সেদিন কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন না করলে বাংলাদেশ হয়তো আজ পাকিস্তানের মতো স্বৈরাচারী, বর্বর-সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হতো। শেখ হাসিনা সে অবস্থা থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করেছেন এবং বাংলার মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে, গণতন্ত্র ও অসাম্প্রদায়িক চেতনায় অভিষিক্ত করেছেন। দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্বাঙ্গনে। স্বপ্ন দেখছে উন্নত বিশ্বে পা রাখার। 
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। দেশব্যাপী অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি হয়েছে। পদ্মা সেতুর মতো মেগাপ্রকল্প নিজেদের প্রচেষ্টা-উদ্যোগে বাস্তবায়ন হচ্ছে, রাজধানী ঢাকাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহর ও আন্তনগর যাতায়াত ব্যবস্থার দৃষ্টিনন্দন উন্নতি হয়েছে। দেশ আজ আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশ রূপান্তরের পথেও এগিয়ে যাচ্ছে। 
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার বর্তমানে ৬ শতাংশ- যা ঈর্ষণীয়ও বটে। কৃষি উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে সরকারের প্রশংসনীয় ভূমিকা রয়েছে। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সুপরিকল্পিত উদ্যোগী ভূমিকাও এই সাফল্যের খাতায় উঠে এসেছে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ আজ আন্তর্জাতিকভাবে অভাবনীয় সম্মানের অবস্থানে এসে পৌঁছেছে ।
শেখ হাসিনার দেশ পরিচালনার মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ বিশ্বের বিস্ময়। বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল। স্যাটেলাইট-১-এর উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আকাশ বিজয় করেছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আকাশ-সমুদ্র-সীমান্ত বিজয় পূর্ণ হয়েছে। সব শর্ত পূরণ করে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ৩০৮৯ মার্কিন ডলার। রিজার্ভ প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থনৈতিক অনেক সূচকে বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের তুলনায় এগিয়ে। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধাপে ধাপে পূরণ হয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগসহ সব ক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হচ্ছে ঈষর্ণীয় পরিবর্তন। এই সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে এবং বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারার জন্য অর্জন করছেন অসংখ্য আন্তর্জাতিক সম্মান। করোনা পরিস্থিতিতে গোটা বিশ্ব যখন পর্যুদস্ত, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ তখন করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে উত্তীর্ণ। 
একদিকে সব হারানোর বেদনা, অন্যদিকে জীবনের ঝুঁকি- এমন এক অমানিশার যুগে তিনি ফিরেছিলেন বাংলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য।  স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির টার্গেট হয়েছেন বারবার। মৃত্যু তাঁর পিছু সারাক্ষণ, তারপর অবিরাম পথচলা বাংলার পথে-প্রান্তরে। বারবার তাঁকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু সৃষ্টির অপার কৃপায় এখনো বাঙালির ভাগ্যবিধাতা তিনি। আজ বাংলাদেশকে এই পর্যায়ে আনতে যিনি সক্ষম হয়েছেন তিনিই শেখ হাসিনা। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। আজ তাঁর ৪২তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে দেশে ফেরেন তিনি। ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ আগস্ট যেদিন বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়, শেখ হাসিনা, ছোটো বোন শেখ রেহানা, স্বামী ও দুই সন্তানসহ তখনকার পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পর ২৫ আগস্ট সকালে এয়ার ইন্ডিয়ার একটি ফ্লাইটে শেখ হাসিনা স্বামী ওয়াজেদ মিয়া, বোন শেখ রেহানা, শিশুপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় এবং শিশুকন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ দিল্লি পৌঁছান। ভারতে তখন জরুরি অবস্থা চলছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে তেমন কোনো খবরাখবর ভারতের পত্রিকায় ছাপা হচ্ছে না। কাজেই তখনকার বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে একরকম অন্ধকারে ছিলেন। দিল্লিতে পৌঁছানোর দুই সপ্তাহ পর ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনা ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎ পান। সেখানেই শেখ হাসিনা ১৫ আগস্ট ঘটে যাওয়া পুরো ঘটনা জানতে পারেন। 
এরপর ভারতেই নির্বাসিত সময় কাটে শেখ হাসিনা, শেখ রেহানার। স্বৈরাচারি সরকারের রাজনৈতিক বৈরি পরিবেশ কাটিয়ে ১৯৭৯ ও ১৯৮০ খ্রিষ্টাব্দে আওয়ামী লীগের কয়েকজন সিনিয়র নেতা বিভিন্ন সময় দিল্লি যান তাদের খোঁজখবর নিতে। এরপর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কয়েকজন কয়েক দফায় দিল্লিতে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।
১৯৮১’র ১৬ ফেব্রুয়ারি দিল্লিতে থাকা অবস্থায় শেখ হাসিনা খবর পান, ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে তাঁকে সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এর এক সপ্তাহ পরে আওয়ামী লীগের সেই সময়ের শীর্ষ নেতারা দিল্লি যান। শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কয়েকটি বৈঠক করেন এই শীর্ষ নেতারা। এদের মধ্যে ছিলেন আব্দুল মালেক উকিল, ড. কামাল হোসেন, জিল্লুর রহমান, আব্দুল মান্নান, আমির হোসেন আমু, বেগম আইভি রহমান, আবদুর রাজ্জাক, তোফায়েল আহমেদ, আব্দুস সামাদ আজাদ, এম কোরবান আলী, বেগম জোহরা তাজউদ্দীন, গোলাম আকবার চৌধুরী ও বেগম সাজেদা চৌধুরী প্রমুখ।
১৬ মে শেখ হাসিনা ও তার মেয়ে দিল্লি থেকে একটি ফ্লাইটে কলকাতা পৌঁছান। ১৭ মে বিকালে তারা কলকাতা থেকে ঢাকায় পৌঁছান। তাদের সঙ্গে ছিলেন আব্দুস সামাদ আজাদ ও এম কোরবান আলী। তবে বাস্তবতা হচ্ছে, শেখ হাসিনা পঁচাত্তরে যে দেশ ছেড়ে গিয়েছিলেন একাশিতে এসে সেই বাংলাদেশ আর ফিরে পাননি। তিনি যে দেশে ফিরে আসেন, সে দেশ তখন পাকিস্তানের ভাব ধারায়। কার্যত যেন পাকিস্তানেরর অংশ। সব হারানোর দেশ।
১৯৮১ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ মে ঢাকার মাটি ছুঁয়ে যে কথা তিনি দিয়েছিলেন, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে চলছেন। একইভাবে সেদিন ঢাকা শহরে লাখ লাখ কর্মী যে শপথ নিয়েছিলেন- দেশের সব পরিস্থিতিতেই তাদের মায়ের মতো, বোনের মতো নেত্রীকে আগলে রাখবেন, সেটিই তারা প্রমাণ করেছেন। বাংলাদেশে বারবার সংকটাপন্ন গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে, স্বাধীনতাবিরোধীদের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার হয়েছে; হচ্ছে, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার হয়েছে, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, নাগরিকের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠাসহ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে- যার নেতৃত্বে একজন মানবিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। 
শেখ হাসিনা যখন দেশে ফেরেন, তখন ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক ছিলেন বর্তমানে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশের (পিআইবি) মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ। তিনি প্রায়শই একটা কথা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর সামরিক শাসক জিয়া আওয়ামী লীগকে ব্র্যাকেটবন্দি করে রেখেছিল। তখন সারাদেশের কর্মীরা ছিলেন হতাশ। প্রশ্ন ছিল- কে তৃণমূলের এই সংগঠনটির হাল ধরবেন, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। সেই বাস্তবতায় শেখ হাসিনা ফিরে আসার মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুকন্যা যেদিন দেশে পা রাখলেন, সেদিনই মানুষ আশায় বুক বেঁধেছিলেন- তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে, আওয়ামী লীগ অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাবে। তাঁর সংগ্রামী নেতৃত্ব বাংলাদেশের উচ্চতা আজ হিমালয়সম।’ 
এই বক্তব্যের সূত্র ধরে বলতে চাই- বিশ্বের কোন জাতির ভাগ্যোন্নয়নে শেখ হাসিনার সংগ্রামী জীবনের মতো কাউকে এত ত্যাগ, এত লড়াই করতে হয়েছে- এমন ইতিহাস খুঁজে পাওয়া কঠিন। এক রাতে বাবা-মা-ভাইসহ ১৮ জন নিকটজন হারানো। তারপর নিজের দেশে ফিরতে না পারা। যেখানে গেছেন তিনি বাধার মুখে পড়েছেন। কিন্তু তিনি দমে যাননি। সারাদেশে তিনি সংগঠনকে শক্তিশালী করেছেন। শত বাধার মুখেও গণতন্ত্রকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ফিরে এসে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করা তাঁর চ্যালেঞ্জ ছিল, তিনি শত বাধা পেরিয়ে সফল হয়েছিলেন। ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তিনি যাত্রা শুরু করেছিলেন। নতুন প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার লক্ষ্যে তিনি একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছেন। সহজ করে বললে- বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এখন বিশ্বের সৎ, যোগ্য, কর্মঠ, মানবতাবাদী গণতান্ত্রিক নেতা। গণতন্ত্রের মানসকন্যা সারা বিশ্বের গণতন্ত্রের মূর্তপ্রতীক।

লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক

জনপ্রিয়