যাঁর নাম শুনলেই হৃদয় উদ্বেলিত হয়, শ্রদ্ধায় মাথা নত হয় -তিনি হলেন বাঙালির প্রিয় অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ১৯ জানুয়ারি, ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে নদীয়া জেলায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতা'র সিটি কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে, বাংলা সাহিত্য নিয়ে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছোটবেলা থেকেই তিনি নাটকে অভিনয় করতে শুরু করেন ।বাড়িতে নাট্যচর্চার পরিবেশ ছিল। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী সৌমিত্র ছিলেন-মঞ্চ অভিনেতা, লেখক ও আবৃত্তিকার। অভিনেতা হিসেবে তিনি ছিলেন কিংবদন্তি ।তবে আবৃত্তিতেও স্বনামধন্য।তিনি কবি এবং অনুবাদকও।
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের ৩৪টি চলচ্চিত্রের মধ্যে ১৫টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। তারপরের অধ্যায় সিনেমা জগতে হাতেখড়ি হয় বিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পরিচালনায় ‘অপুর সংসারে।সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এবং শর্মিলা ঠাকুরের সেই সংলাপ, কেমিস্ট্রি এখনো বাঙালির মননে অমলিন।
তিনি মানেই ‘অপু’ আবার কখনও তিনি মানেই ‘ফেলুদা’। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের পেশাগত জীবন অত্যন্ত ঘটনাবহুল ও বহু দেশি-বিদেশি পুরস্কার ও সম্মানে পরিপূর্ণ। তিনি সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার পেয়েছেন। ইতালি থেকে পেয়েছেন লাইফ টাইম এচিভমেন্ট পুরস্কার। তিনি ভারত সরকারের পক্ষ থেকে পদ্মভূষণে সম্মানিত হন।
‘অর্ডার দি আর্ট এ দে লেটার’ হলো, শিল্পীদের জন্য ফ্রান্সের সর্বোচ্চ সম্মান। ভারতীয় চলচ্চিত্র জগৎ থেকে তিনিই প্রথম এই সম্মানে ভূষিত হন।
শিশির ভাদুড়ীর নাটক দেখার সুযোগ হয় এবং সেখান থেকেই জীবনের মোড় ঘুরে যায়। সেদিনই তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, অভিনেতা হিসেবে জীবনে তিনি প্রতিষ্ঠিত হবেন।
বর্তমান প্রজন্ম নয়, আগামী কয়েকটি প্রজন্মের অভিনেতাদের কাছে তিনি অনুপ্রেরণার উৎস।