ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪ , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

বিদ্যুতের দাম ফের ঈদের পর বাড়তে চলেছে

জাতীয়

আমাদের বার্তা ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৮:৪০, ২২ মার্চ ২০২৩

সর্বশেষ

বিদ্যুতের দাম ফের ঈদের পর বাড়তে চলেছে

ফের বাড়তে চলেছে বিদ্যুতের দাম। ডলার সংকট, ভর্তুকি সমন্বয় করতে না পারাসহ আইএমএফের ঋণের বিপরীতে শর্ত পালনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে এ দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়তে পারে আরও ৫ শতাংশ। মূল্যবৃদ্ধির ঘোষণা আসতে পারে ঈদের পরেই।

বিগত দুই মাসে (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুতের মূল্য তিন দফায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। সবশেষ ২৮ ফেব্রুয়ারি ৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি করা হয়। নতুন করে দাম বাড়ানো হলে গত ১৪ বছরে ১৩ তম বারের মতো গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বাড়বে।

সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, ভর্তুকি কমাতেই নেওয়া হচ্ছে এমন সিদ্ধান্ত। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দ প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা কমেছে। গত অর্থবছরে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দুটি বিভাগে ২৭ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। এ বছর সে বরাদ্দ নেমে এসেছে ২৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকায়, যা আগের বছরের তুলনায় ১ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা কম।

কেবল চলতি বছরের দুই মাসেই (জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি) পিডিবির আর্থিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে চার হাজার দুইশ ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। এ ঘাটতি ভর্তুকি আকারে চাইতে বিদ্যুৎ বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে পিডিবি। 

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনে নিয়োজিত ইন্ডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার (আইপিপি) ও ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসহ ভারত থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় করে কমমূল্যে পাইকারি গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করায় পিডিবির আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে।

বর্তমানে আইপিপি, ভাড়াভিত্তিক ও দ্রুত ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ভারত থেকে উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় করে কমমূল্যে পাইকারি গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করার কারণে গত ২০২১-২২ অর্থবছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ চার হাজার দুইশ ১০ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। 

এই আর্থিক ঘাটতির মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসের ক্ষতি আইপিপি/এসআইপিপি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে দুই হাজার ৮২ কোটি ৭১ লাখ, দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্র থেকে ৬৬ কোটি ২১ লাখ এবং ভারত থেকে আমদানিতে ২৩ কোটি ৯৭ টাকা ক্ষতি হয়েছে। উল্লিখিত মাসে বিদ্যুৎ ক্রয়-বিক্রয়ে মোট আর্থিক ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার ১৫১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

অক্টোবর মাসের ক্ষতি আইপিপি/এসআইপিপি থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ে দুই হাজার ৫ কোটি ২১ লাখ, দ্রুত ভাড়াভিত্তিক কেন্দ্র থেকে ৬৪ কোটি ৯৫ লাখ এবং ভারত থেকে আমদানিতে ২২ কোটি ১৬ টাকা ক্ষতি হয়েছে। উল্লিখিত মাসে বিদ্যুৎ ক্রয়-বিক্রয়ে মোট আর্থিক ক্ষতি হয়েছে দুই হাজার ৫৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ বিভাগ থেকে এই চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হলেও এ নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি বলে জানায় পিডিবি।

চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি বিশেষ প্রেক্ষাপটে বিদ্যুৎ, জ্বালানি, তেল ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ এবং সমন্বয়ে সরাসরি সরকারের হস্তক্ষেপের সুযোগ রেখে ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) আইন ২০২৩’-এর খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। এর আগে আইন সংশোধন করে গত ১ ডিসেম্বর ‘বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন), অধ্যাদেশ, ২০২২’ গেজেট আকারে প্রকাশ করে সরকার। এর মধ্য দিয়ে বিশেষ ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম সরাসরি বাড়ানো বা কমানোর ক্ষমতা যায় সরকারের হাতে।

গত ২১ নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯ দশমিক ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে বিইআরসি। এরপরই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধির আবেদন করে বিতরণ কোম্পানিগুলো। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ জানুয়ারি গণশুনানি করে বিইআরসি। কিন্তু গণশুনানি শেষে নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাহী আদেশে বিইআরসিকে পাশ কাটিয়ে ১৫ শতাংশ বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করে সরকার।এবং সে প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই আরেক দফা বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি করা হবে। যার ঘোষণা আসতে পারে ঈদের পরেই।

এ প্রসঙ্গে পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘বিদ্যুৎ খাতে সরকারের ভর্তুকি ছিল ১২ হাজার কোটি টাকা। বিশ্ববাজারে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিতে সে ভর্তুকির পরিমাণ এখন দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার কোটি টাকা। সরকার তো বর্তমানে এতো পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়ার মতো প্রস্তুত নয়। কারণ অন্যান্য খাতেও ভর্তুকি রয়েছে। তারপরও কিন্তু সরকার অর্ধেক মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে।

তিনি বলেন, পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ২০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। লোকসানের হাত থেকে বাঁচতে বিতরণ সংস্থাগুলোও ভোক্তা পর্যায়ে ২০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধির জন্য পিডিবির কাছে আবেদন করেছে। সে ভিত্তিতেই ধাপে ধাপে ১৫ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি করা হয়েছে এবং ঈদের পর আরেক দফা করা হতে পারে। এর ফলে জনজীবনে চাপ বাড়ছে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু গ্রাহকরা একটু সাশ্রয়ী হলেই এই মূল্যবৃদ্ধির চাপটা সামলাতে পারবে।

জনপ্রিয়