বিয়ের পর প্রত্যেক দম্পতির স্বপ্ন থাকে কোলজুড়ে আসবে নতুন অতিথি। কেউ বিয়ের পরপরই সন্তান নিয়ে নেন, আবার কেউ নেন দেরিতে। কেউবা আবার বিয়েই করেন দেরিতে। এদিকে চাকরি, সামাজিকতা, শখ— সব সামলে মা হওয়ার বয়স স্বাভাবিকভাবেই পিছিয়েছে।
সন্তান নেয়ার একটি নির্দিষ্ট বয়স আছে। আবহাওয়া, জলবায়ু ও খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে আমাদের দেশে ৩৫ বছর বয়সের পর মা হওয়ার ক্ষেত্রে ঝুঁকি বাড়ছে। বেশি বয়সে মা হলে কিছু বাড়তি জটিলতার সৃষ্টি হয়। আসুন জেনে নেই কীভাবে সামাল দেবেন সে বিষয়টি-
চিকিৎসকদের মতে, বয়সের কারণে সন্তানধারণের ক্ষেত্রে মা ও সন্তানের কয়েকটি ঝুঁকি থেকে যায়। তবে তা সম্পূর্ণই নির্ভর করে মায়ের শারীরিক অবস্থার ওপরে। তিনি আগে মা হয়েছেন কি না এবং তার কোনো ক্রনিক রোগ আছে কি না, সেটিও এক্ষেত্রে বিবেচ্য। যেমন- মায়ের ভেনাস থ্রম্বোসিস (রক্ত জমাট বাঁধা), জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন রয়েছে কি না তা দেখতে হবে।
এ ছাড়া সদ্যোজাতের ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলো হতে পারে- তা হল প্রিম্যাচিয়োর বার্থ, ডাউন সিনড্রোম, লো বার্থ ওয়েট।
৩০ পেরিয়ে সন্তানধারণের আগে প্রথম থেকেই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত যাতে মা ও শিশু সুস্থ থাকে।
স্বাস্থ্যকর খাবার
সন্তানধারণের পরিকল্পনা শুরু করলে সবার আগে বাইরের ‘জাঙ্ক ফুড’ খাওয়া বন্ধ করতে হবে। সন্তানধারণের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করার জন্য ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি, জটিল কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ভাল চর্বিযুক্ত খাবার রাখতে হবে। ধূমপান ও মদ্যপান একেবারেই বন্ধ করতে পারলে ভাল। অতিরিক্ত চা, কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তাতেও রাশ টানতে হবে।
মানসিক চাপ দূর করা
সন্তানধারণের ইচ্ছা থাকলে সবার আগে মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে। মানসিক চাপ বাড়লে ঋতুচক্র অনিয়মিত হয়ে পড়ে। ফলে সন্তানধারণের সম্ভাবনা কমে আসে। তাই মনকে শান্ত রাখতে যোগাসন, ধ্যান শুরু করতে পারেন।
সঙ্গমে মন
সমীক্ষা অনুসারে, যে দম্পতিরা প্রতিদিন সঙ্গম করেন, তাদের সন্তানধারণের সম্ভাবনা বেশি। সন্তানধারণ করতে হবে এই চিন্তা মাথায় নিয়ে নয়, মিলন উপভোগ করুন, তা হলেই দ্রুত ফল পাবেন।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা
মহিলাদের ক্ষেত্রে স্থূলতা ও ডায়াবেটিস অনিয়মিত ঋতুস্রাব এবং অকাল ঋতুবন্ধের সমস্যা ডেকে আনে। এ ছাড়াও ডায়াবেটিস থাকলে গর্ভপাতের ঝুঁকি, সময়ের আগেই প্রসব এবং বন্ধ্যত্বজনিত সমস্যা বাড়ে। তাই স্থূলতার সমস্যা থাকলে নিয়মিত শরীরচর্চা শুরু করুন।
চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ
মাস ছয়েক চেষ্টার পরেও সন্তানধারণে সক্ষম না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে শারীরবৃত্তীয় সমস্যা থাকতে পারে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, হরমোনজনিত সমস্যা, প্রারম্ভিক মেনোপজ, ফ্যালোপিয়ান টিউব বাধা বা জরায়ুতে গঠনগত অস্বাভাবিকতাসহ বিভিন্ন কারণে মহিলা ডিম্বস্ফোটন করতে ব্যর্থ হন। এন্ডোমেট্রিওসিস এবং জরায়ু ফাইব্রয়েড থাকলেও প্রজনন ক্ষমতা প্রভাবিত হয়।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।