একসময় ছিলেন বরগুনা জেলার বেতাগী পৌরশহরের নরসুন্দর (নাপিত)। এখন ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলা শহরে দন্ত চিকিৎসক। নামের আগে লেখেন ডাক্তার। কাঠালিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দক্ষিন পাশের রোডে চেম্বার খুলে নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ দন্ত চিকিৎসকের নাম শিবানন্দ শিবু (শিবু শীল)। কোন ডাক্তার না হয়েও নামের আগে ডা. লিখে দীর্ঘদিন ধরে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছেন। গ্রামের অসহায় ও সহজ-সরল মানুষের চিকিৎসার নামে অর্থ আত্মসাতসহ নানা অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি এক স্কুল শিক্ষিকাকে ভুল চিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুল চিকিৎসার শিকার গুরুতর অসুস্থ ওই স্কুল শিক্ষিক এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বরগুনা জেলার বেতাগী পৌরশহরে নরসুন্দরের কাজ করতেন শিবানন্দ শিবু । পরবর্তীতে কোন ধরনের একাডেমিক, বিডিএস সনদ ছাড়াই শুরু করেন দন্ত চিকিৎসা। “নামের পূর্বে ডা. শিবানন্দ শিবু, ডিপ্লোমা ইন ডেন্টাল টেকনোলজি, ঢাকা”- প্যাড, সাইন বোর্ড ও ব্যানারে ব্যবহার করে চেম্বার সাজিয়ে দাঁতের চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষকে প্রতারিত করে আসছেন।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষিকার স্বামী মিলন সিকদার বলেন, আমার স্ত্রী শিবানন্দ শিবুর চেম্বারে যায় তার একটি দাঁতে ক্যাপ বসানোর জন্য। কিন্তু ক্যাপ বসানোর নামে তার দাঁতে কয়েকটি সার্জারি করেন শিবানন্দ শিবু। এতে তার দাঁতে প্রচন্ড ব্যাথা হয়। পরে পুনরায় তার কাছে গেলে রোগীর শরীরে একটি ইনজেকশন পুস করে এবং প্রেসক্রিপশনে বিভিন্ন রকেমের ওষুধ লিখে দেন। বাসায় আসার পরে স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সমস্ত গায়ে জ্বালা যন্ত্রণাসহ কালো কালো ঠোসকা পড়ে। এরপর তাকে একজন এমবিবিএস ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে তিনি জানান উল্টা পাল্টা ওষুধের কারণে তার এরকমের হয়েছে। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিবু কোন ডাক্তারই নয়। সে মূলত একজন নাপিত।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তাপস কুমার তালুকদার বলেন, কোন বিডিএস ডিগ্রী অর্জন ছাড়া ডা. লিখতে পারবে না। সাধারণ রোগীদের সচেতন হওয়াসহ হাতুরে ডাক্তারের কাছে না যাওয়ার পরামর্শ দেন এই কর্মকর্তা।
ঝালকাঠি সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম বলেন, ভূক্তোভোগীরা আমাদের কাছে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।