পুলিশের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় শনিবার গ্রেপ্তার হয়ে কয়েকঘন্টা কারাভোগ শেষ মুক্ত হন চিত্রনায়িকা মাহি। তার এই ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরব হয়েছিলেন শোবিজ অঙ্গনের অনেক তারকা। তাদের মধ্যে অন্যতম চিত্রনায়িকা পরীমনি, অভিনেত্রী জয়া আহসান ও মেহের আফরোজ শাওনসহ অনেকে।
মাহির গ্রেপ্তারের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শনিবার ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে পরীমনি লেখেন, এ নিয়ে শনিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাহির দুটি ছবি পোস্ট করে পরীমনি লেখেন, ‘এইটা কোনো কথা না ভাই। চুপ করে থাকতে থাকতে কখন যে বোবা হয়ে যাব আমরা। দেখছেন মাহির দিকে। বুক কাঁপল না আপনাদের!’
তিনি আরও লেখেন, ‘একজন অন্তঃসত্ত্বার এই শারীরিক ও মানসিক ধকলের দায়ভার কে নিচ্ছে তাহলে! আইনের এই খেলা বন্ধ হোক। মাহিকে অনতিবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।’
পুলিশকে অন্তঃসত্ত্বা মাহির প্রতি সংবেদনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়ে জয়া আহসান লিখেন, ‘অভিনেত্রী মাহিয়া মাহিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রেপ্তার করা হয়েছে। মাত্রই খবরে পড়লাম, পুলিশ তাকে রিমান্ডে আনার আবেদন করলেও আদালত তা মঞ্জুর করেননি। মাহি জনপ্রিয় অভিনেত্রী, কিন্তু দেশের সব নাগরিকের মতো তিনিও আইনের অধীন।
‘তবে এই কথাটা বিশেষভাবে মনে রাখা দরকার, তিনি এখন নয় মাসের অন্তঃসত্তা। তার অভিযোগের তদন্ত চলুক, কিন্তু একজন গর্ভধারিণী মায়ের এবং তার সন্তানের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘রিমান্ড মঞ্জুর না করার জন্য বিজ্ঞ আদালতকে ধন্যবাদ জানাই। পুলিশের কর্মকর্তাদেরও অনুরোধ করব, মা আর অনাগত শিশুর যেন কোনো ক্ষতি না হয়, সে ব্যাপারে যেন সংবেদনশীল থাকবেন।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনভাবেই মাহির পক্ষে সরব হয়েছিলেন আরও অনেকেই। তাইতো কারামুক্ত হওয়ার পর তাদের প্রতি ভালোবাসা-কৃতজ্ঞা প্রকাশ করতে ভুলেননি মাহি।
শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে মাহি লেখেন, ‘ওরে আমার পরী, ওরে আমার জয়া আপা, আমার শাওন আপা, তমা, রিপা, মিতু, নীড় আর বিশেষভাবে আমার সমস্ত সাংবাদিক ভাইরা…, আমার কলিজা তোমরা, আমার শক্তি তোমরা।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলায় শনিবার বেলা ১২টার দিকে বিমানবন্দর এলাকা মাহিকে গ্রেপ্তার করে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর তাকে গাজীপুর চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে (সিএমএম) পাঠানো হয়। বিচারক রিমান্ড নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
কারাগারে যাওয়ার সাড়ে ৩ ঘণ্টা পরেই জামিন মিলে নায়িকার। বিকেল ৫ টায় দিকে মাহিকে জামিন দেন আদালত। এরপর রাত পৌনে ৮টার দিকে কারাগার থেকে বের হন নায়িকা।
শুক্রবার রাতে গাজীপুরের বাসন থানার এসআই রোকন মিয়া বাদী হয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মাহি ও তার স্বামী রাকিব সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এছাড়া জমি দখলের অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ইসমাইল হোসেন।