মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে অনলাইনে ঋণ দেওয়ার ফাঁদ চক্রে জড়িত দুই চীনাকে খুঁজছে পুলিশ। তারা দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশসহ তিনটি দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে।
বুধবার রাজধানীর বারিধারায় এন্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির সাইবার ক্রাইম উইংয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) ফারহানা ইয়াসমিন।
তিনি বলেন, এই চক্রের হাতে প্রতারিত হয়ে রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় অভিযোগ করেন এক ভুক্তভোগী। পরে ‘ইনফর্ম এটিইউ’ অ্যাপেও অভিযোগ করেন তিনি। অভিযোগের তদন্ত নেমে চক্রটির সন্ধান পাওয়া যায়। মঙ্গলবার উত্তরার ১১ নম্বর সেক্টরের সোনারগাঁও জনপথ রোডের একটি বাসা থেকে চক্রের কল সেন্টারের অন্যতম প্রধান মহিউদ্দিন মাহিসহ চক্রের ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রের মূলহোতা চীনের দুই নাগরিক। অভিযানের সময় তাদের পাওয়া যায়নি। তবে তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রেপ্তার হওয়া মহিউদ্দিন মাহি চীনে পড়াশোনা শেষ করে দেশে ফিরেন। পরে দুই চীনাসহ তিনি চক্রটি গড়ে তোলেন। তারা বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকদেরও র্যাপিড ক্যাশের মাধ্যমে ঋণ দিয়ে প্রতারণা করে আসছিল।
পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, কল সেন্টারে কাজ করা তরুণ-তরুণীরা হিন্দি ও উর্দু ভাষায় ভারতীয় ও পাকিস্তানি নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলে। তবে এই দুই দেশে একই অ্যাপ ভিন্ন নামে লোন দিচ্ছে। সেখানেও ৫০০ টাকা থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্র লোন দিয়েছে। এর বিপরীতে তারা ধাপে ধাপে ২০ থেকে ২২ লাখ টাকা পর্যন্তও আদায় করছে। এছাড়া মাহি কল সেন্টারের স্টাফদের ১২-১৫ হাজার টাকা বেতন দিলেও গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা আদায় করলে বোনাস দিতেন।
এক প্রশ্নের জবাবে এটিইউর এ কর্মকর্তা বলেন, মাহি উচ্চ শিক্ষিত। তিনি চীনা ভাষায় অত্যন্ত দক্ষ। তিনি কিপ্ট কারেন্সি কয়েন ব্যবসা ভালো বুঝেন। এমন কী তার কর্মীদের ওপর প্রচণ্ড মানসিক চাপ সৃষ্টি করত গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করতে। টাকা আদায় করতে না পারলে তাদের ওপরে মানসিক অত্যাচারও করতেন।