বিদেশি ঋণে উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রকল্প বাছাই, ঋণের উৎস ও শতাবলি সম্পর্কে আরো সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন সিডিপির ডিশটিংগুইশড ফেলো প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) আকার যে হারে বাড়ছে, বিদেশি ঋণের স্থিতি বাড়ছে এর চেয়ে আরো অনেক বেশি হারে।
এ অবস্থা চলতে থাকলে বিদেশি ঋণ পরিশোধের সামর্থ্য কমে আসার পাশাপাশি ঋণমান কমে যাওয়ায় নতুন ঋণ পাওয়ার সুযোগও কমে আসবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে সিপিডি (সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ) ‘বাংলাদেশ’স এক্সটারনাল পাবলিক বোরোইংস অ্যান্ড ডেবিট সার্ভিসিং ক্যাপাসিটি আর দেয়ার রিজনস ফর কনসার্ন?’ শীর্ষক একটি গোলটেবিল সভার আয়োজন করে।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, সিপিডির ডিশটিংগুইশড ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ছাড়াও অর্থনীতিবিদ, বিশেষজ্ঞ ও ব্যক্তিখাতের উদ্যোক্তারা বক্তব্য দেন।
এ গোলটেবিল বৈঠকের আলোচনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় সিডিপির ডিশটিংগুইশড ফেলো প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশি ঋণের নির্ভরতা ও ঋণ পরিশোধের চাপ সামাল দিতে অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গত কয়েকটি পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় জিডিপির বিপরীতে কর ও রাজস্ব আহরণে বড় লক্ষ্য বেঁধে দেয়া হলেও তা পূরণ হয়নি। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামীতে বিদেশি ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতেই নতুন করে ঋণ নিতে হবে। ঋণের চাপ কমাতে প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আনতেও তাগিদ দেন এই অর্থনীতিবিদ।
তিনি বলেন, আরো বিদেশি আর্থিক ঋণসহায়তা বর্তমানে পাইপলাইনে রয়েছে। কিন্তু তা পরিশোধের গতি বিলম্বিত হওয়ায় দেশের মানুষের ওপর করের বোঝা আরো বাড়বে। এছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি আরো কমে যাবে। বিদেশি ঋণে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টিকে লাভজনক রাখতে তিনি ‘কনসেশনাল’ (নমনীয়) ঋণ বেশি পরিমাণে নেয়ার সুযোগ কাজে লাগানোর পরামর্শ দেন।
ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, আগে ‘ননকনসেশনাল’(অনমনীয়) ঋণের ক্ষেত্রে ইআরডি অনেক কঠোর ছিলো। এ ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে যোগাযোগটাও হতো সতর্কভাবে। এখন এমনটা আর দেখা যায় না। তিনি বলেন, এশীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাংকসহ নমনীয় ঋণের বেশ কিছু উৎস নতুন করে এসেছে। এই সব উৎস কাজে লাগিয়ে নমনীয় ঋণ গ্রহণ বাড়াতে হবে।