খেলাপি ঋণ গোপন করার সংস্কৃতি থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে করে খেলাপি ঋণ বৃদ্ধিতে আগের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ প্রায় ৬৬ হাজার কোটি টাকা বেড়ে প্রথমবারের মতো দুই লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। গত জুন শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে ব্যাংকগুলোর মোট ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা। এর মানে মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ ঋণখেলাপি। তিন মাস আগে গত মার্চ শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো এক লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি টাকা, যা ছিলো ১১ দশমিক ১১ শতাংশ। এপ্রিল–জুন সময়ে তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ২৯ হাজার ৯৬ কোটি টাকা। আর গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ ছিলো এক লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা। এর মানে বছরের প্রথম তিন মাসে বেড়েছিলো ৩৬ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার পতনের আগেই আইএমএফের শর্ত মেনে গত মার্চ থেকে কৌশলে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ কমে এসেছে। আবার তদারকি শিথিলতার কারণে এতোদিন জালিয়াতি ও অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণ করা ঋণ আর ফেরত আসছে না।
সরকার পতনের পর এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ ঘরনার ব্যবসায়ীদের অনেকেই পালিয়েছেন। এতে করে খেলাপি ঋণ আগামীতে আরো বাড়তে পারে বলে ব্যাংকাররা জানিয়েছেন। আইএমএফের ৪৭০ কোটি ডলার ঋণের জন্য বিভিন্ন শর্ত দিয়েছে সংস্থাটি। তাদের শর্ত মেনে ২০২৬ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ ৫ শতাংশের নিচে এবং সরকারি ব্যাংকের ১০ শতাংশের নিচে নামানোর কথা।