দেয়ালে স্কচটেপ দিয়ে আটকানো কলা নিয়ে বিশ্বজুড়ে গণমাধ্যমে চলছে ব্যাপক শোরগোল। প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত ফলটিকে শিল্পকর্মে রূপ দিয়েছিলেন ইতালির শিল্পী মরিজিও ক্যাটালান। আর তাতেই সাধারণ কলাটির দাম ওঠে ৬২ লাখ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৭৪ কোটি টাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত নিলামে ‘কমেডিয়ান’ শিরোনামে কলার শিল্পকর্মটি কেনেন চীনা ক্রিপটোকারেন্সি উদ্যোক্তা জাস্টিন সান। ‘শৈল্পিক অভিজ্ঞতার’ অংশ হিসেবে কলাটি খেয়ে ফেলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন তিনি।
এক সপ্তাহের ব্যবধানে আজ শুক্রবার ৭৪ কোটি টাকা দামের কলাটি সত্যিই তিনি খেয়ে ফেলেছেন! হংকংয়ের একটি নামী হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ডজনখানেক সাংবাদিক ও ইনফ্লুয়েন্সারদের সামনে তিনি কলাটি খান। অতিথিদেরকে একটি করে কলা ও স্কচটেপ রোল স্মারক হিসেবে দেওয়া হয়।
কলায় কামড় দিয়ে সান বলেন, ‘এটি অন্যান্য কলার চেয়ে অনেক সুস্বাদু।’
তবে এবারই প্রথম নয়, এর আগেও এই শিল্পকর্মে ব্যবহৃত কলা দুবার খাওয়া হয়েছে। প্রথমবার ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে মিয়ামি বিচের আর্ট বাসেল মেলায়, সেবারই প্রথমবারের মতো এই শিল্পের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল। প্রথমবারই পারফরম্যান্স শিল্পী ডেভিড দাতুনা কলাটি দেয়াল থেকে হাতে নিয়ে খেয়ে ফেলেন। বিষয়টি নিয়ে পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে দাতুন জানান, এটিও ছিল তাঁর একটি পারফরম্যান্স আর্ট। কলাটি দ্বিতীয়বার খাওয়া হয় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে, সেবার কলাটি খায় দক্ষিণ কোরিয়ান এক শিক্ষার্থী। তবে এদের কেউই এর জন্য কোনো অর্থ পরিশোধ করেননি।
শিল্পকর্মটির একটি বিশেষত্ব হচ্ছে, এতে ব্যবহৃত কলাটি প্রতিবার প্রদর্শনীর পূর্বে প্রতিস্থাপন করতে হয়। এ জন্য একটি নির্দেশিকাও রয়েছে। জাস্টিন সান শিল্পকর্মটি কেনার সময় সেই নির্দেশিকাও কিনে নেন।
আসলে কলা বদলে গেলেও শিল্প বদলে ফেলা সম্ভব নয়। কেউ যদি মরিজিও ক্যাটালানের ওই শিল্পকর্ম কেনেন, তবে তিনি কলাটির সঙ্গে একটি সার্টিফিকেট পাবেন। সেই সার্টিফিকেট যার কাছে থাকবে শুধু তিনিই যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে নতুন আরেকটি কলা দিয়ে শিল্পটি তৈরি করার সুযোগ পাবেন।
শুধু তা-ই নয়, শিল্পমূল্যের স্বাভাবিক প্রবণতা অনুযায়ী, তিনি ওই কলা বর্তমানে কেনা দামের চেয়েও বেশি দামেই বিক্রি করবেন।