বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আরো জোরদার করতে ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট বা মুক্তবাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ সংসদ সদস্য রূপা হক।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) রাজধানীর বনানীর হোটেল সারিনায় আয়োজিত এক বৈঠকে তিনি এ প্রস্তাব দেন।
যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ ক্যাটালিস্টস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ইউকেবিসিসিআই) প্রতিনিধি দলের সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সফরে আসা রূপা হক বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে যেকোনোভাবে একটি এফটিএ প্রয়োজন। শুধু পোশাকশিল্পের ওপর নির্ভর না করে প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মতো খাতে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যুক্তরাজ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। বিশেষ করে তেল, গ্যাস এবং গমের মতো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি জনজীবনে চরম চাপ ফেলছে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে বাণিজ্যের নতুন পথ খুঁজতে হবে।
বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেন, রাজনীতির পুরোনো ইস্যুতে পড়ে থাকলে চলবে না। আমাদের নতুন সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের যেন কখনো বৈষম্যের মুখে পড়তে না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।
অর্থনীতির গণতন্ত্রায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের আরো উদার হতে হবে। সমস্ত বড় সুযোগ-সুবিধা কেন শুধু পোশাক খাত পেল, আর অন্য ২০টি সম্ভাবনাময় খাত তা পেল না, সেটি গভীরভাবে বিবেচনা করতে হবে। সবার জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে ব্যবসার খরচও স্বাভাবিক নিয়মেই কমে আসবে।
তিনি আরো বলেন, 'ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট নিয়ে অনেক আলোচনা হয়। কিন্তু এত বড় তরুণ কর্মী বাহিনী যদি দক্ষ না হয়, তাহলে এই জনসংখ্যার সুবিধা কোনো কাজে আসবে না।'
আমীর খসরু বলেন, যখন আমরা ক্ষমতায় আসব, আমাদের কূটনীতি হবে বাণিজ্যকেন্দ্রিক। প্রতিটি মিশনকে বাণিজ্য প্রসার এবং প্রবাসীদের সঙ্গে সঠিক সম্পৃক্ততা নিয়ে তাদের অগ্রগতির প্রতিবেদন দিতে হবে।
বিজিএমইএর প্রশাসক মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বাংলাদেশ এখনো বছরে ১১ বিলিয়ন ডলারের টেক্সটাইল পণ্য আমদানি করে, যা কমিয়ে আনার জন্য এই খাতে বিনিয়োগের সুযোগ কাজে লাগানো উচিত।
ভিয়েতনামের উদাহরণ দিয়ে বলেন, যুক্তরাজ্যের সঙ্গে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি হলে রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো সম্ভব।
অন্যদিকে, বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, বিদেশি ক্রেতারা অন্যায্যভাবে কম দামে পোশাক কিনছে। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন আরো তিন বছর পিছিয়ে দিলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পেতে পারে।