![পূর্ণ সক্ষমতায় আদানিকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান বাংলাদেশের পূর্ণ সক্ষমতায় আদানিকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আহ্বান বাংলাদেশের](https://www.amaderbarta.net/media/imgAll/2023November/adani-2502110725.jpg)
আদানি পাওয়ারকে ভারতে অবস্থিত তাদের ১৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় সরবরাহ শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এতথ্য জানিয়েছে।
ওই কর্মকর্তা জানিয়েছে, পুনরায় আদানি পাওয়ারের কাছ থেকে পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ নেওয়া শুরু করবে বাংলাদেশ।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে আদানি বাংলাদেশে কম বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছিল। শীতের মৌসুমে কম চাহিদা ও অর্থ পরিশোধ সংক্রান্ত বিরোধের কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নেমে আসে।
২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের চুক্তির অধীনে ভারতের ঝাড়খণ্ডে অবস্থিত আদানি তাদের ২ বিলিয়ন ডলারের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট নিয়ে গঠিত এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদিত সম্পূর্ণ বিদ্যুৎই বাংলাদেশে সরবরাহ করা হয়।
বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মোকাবিলার কারণে বাংলাদেশের বিল পরিশোধে বিলম্ব হওয়ায় আদানি ৩১ অক্টোবর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে আনে। এর ফলে ১ নভেম্বর একটি ইউনিট বন্ধ হয়ে যায়, যার ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি মাত্র ৪২ শতাংশ সক্ষমতায় পরিচালিত হতে থাকে। পরবর্তীতে বাংলাদেশও আদানিকে অর্ধেক বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য বলেছিল।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, বকেয়া পরিশোধের জন্য তারা প্রতি মাসে আদানিকে ৮৫ মিলিয়ন ডলার করে দিচ্ছে এবং এখন কোম্পানিটিকে দুই ইউনিট থেকেই বিদ্যুৎ পুনরায় সরবরাহের জন্য বলেছে।
বিপিডিবির চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম রয়টার্সকে বলেন, সাম্প্রতিক চাহিদা অনুসারে তারা দ্বিতীয় ইউনিট চালুর পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু অনেক বেশি কম্পনের কারণে তা সম্ভব হয়নি। তিনি জানান, সোমবার ইউনিটটি পুনরায় চালু করতে গিয়ে কিছু প্রযুক্তিগত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে আমরা প্রতি মাসে ৮৫ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করছি। আমরা আরও বেশি পরিশোধের চেষ্টা করছি এবং বকেয়া কমানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এখন আদানির সঙ্গে কোনো বড় সমস্যা নেই।
এ বিষয়ে আদানির একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি।
গত ডিসেম্বরে আদানির একটি সূত্র জানায়, বিপিডিবির কাছে কোম্পানির পাওনা প্রায় ৯০০ মিলিয়ন ডলার। তবে করিম সে সময় দাবি করেছিলেন, বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৬৫০ মিলিয়ন ডলার।
বিদ্যুতের ট্যারিফ নির্ধারণ নিয়ে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু হলো ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দের চুক্তি, যেখানে দুটি সূচকের গড়ের ভিত্তিতে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। রয়টার্স এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদানি থেকে নেওয়া বিদ্যুতের মূল্য ভারত থেকে সরবরাহকৃত অন্য কেন্দ্রের বিদ্যুতের মূল্যের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি।
বিশেষজ্ঞ একটি কমিটিকে আদানির সঙ্গে করা চুক্তিটি পরীক্ষা করার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশের একটি আদালত । কমিটির প্রতিবেদনটি এই মাসেই প্রকাশ করা হবে। এর ফলে চুক্তি পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা রয়েছে।