
আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য আগামীকাল শুক্রবার (২৮ মার্চ) সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী— এই চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে দুই ঘণ্টার জন্য লেনদেন কার্যক্রম চালু থাকবে।
তবে, এসব উদ্যোগ লোকদেখানো এবং নিষ্ঠুর সান্ত্বনা হিসেবে অভিহিত করেছেন বেতন-ভাতা বঞ্চিত শিক্ষকরা। এই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে অনেক শিক্ষকই বেতন তুলতে পারবেন না বলে অভিযোগ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংক সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করেছে।
এতে বলা হয়েছে, শুক্রবার সরকারি ছুটি হলেও এই চার ব্যাংকে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সীমিত পরিসরে লেনদেন চলবে। তবে ব্যাংকের অফিস কার্যক্রম চলবে দুপুর ৩টা পর্যন্ত। জুমাতুল বিদার কারণে দুপুর ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত নামাজের বিরতি থাকবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইন, ১৯৯১-এর ৪৫ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে জনস্বার্থে এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এদিন দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিয়ম অনুযায়ী ভাতা পাবেন বলে জানানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সরকার বেসরকারি শিক্ষকদের ঈদের আগে বেতন-ভাতা পরিশোধ নিশ্চিত করতে এ বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।
এদিকে নজিরবিহীন অবহেলা, অদক্ষতা ও নিষ্ঠুরতার শিকার সাড়ে তিন লাখের বেশি এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী। তাদের সরকারি সহকর্মীরা মার্চ মাসের বেতন ও উৎসব ভাতার টাকা পেয়েছেন ইতিমধ্যে। ইএফটি নামক জুজু দেখিয়ে আরো অনেকে ডিসেম্বর থেকে বেতন পাচ্ছেন না। এসব নিয়ে গণমাধ্যমে প্রচুর প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও টনক নড়েনি কর্তাদের। উপপরিচালক ব্যস্ত বদলি বাণিজ্যে। ইএমআইএসের জামিল ও জহির ব্যস্ত ঘুষে। অন্যন্যরা ব্যস্ত অহেতুক সেমিনার ও মিটিংয়ে। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকমের অনুসন্ধানে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
জানা যায়, তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হলে শেষ সময়ে এসে বিশেষ ব্যবস্থাপনায় একদিন অতিরিক্ত ব্যাংক খোলা রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। উপস্থিত ছিলেন অধিদপ্তরের কর্তারা।
তারা বলছেন, রাষ্ট্রায়াত্ত চারটি ব্যাংকের মাধ্যমে এমপিও শিক্ষকদের টাকা বন্টন হয়। অনেকের ডিসেম্বর মাস থেকে বেতন-ভাতা আটকা।
জানা গেছে, শিক্ষা ক্যাডার পরিচালিত মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরাধীন সাড়ে তিন লাখ শিক্ষক-কর্মচারী মার্চের বেতন ও উৎসব ভাতা পাওয়ার জন্য আরো একদিন ব্যাংক খোলা রাখার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ জানাবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে। অথচ গত কয়েকদিন ধরে অবহেলা ও অদক্ষতায় সময় কেটেছে শুধু শুধু।
তবে, প্রশাসন ক্যাডার পরিচালিত মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন শিক্ষক-কর্মচারীরা তুলনামূলক কম হয়রানির শিকার। উৎসব ভাতার টাকা তারা তুলতে পেরেছেন অনেকেই।