ঢাকা সোমবার, ০৭ এপ্রিল ২০২৫ , ২৩ চৈত্র ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

সাতক্ষীরায় ২ বছরে বাগদাচিংড়ি উৎপাদন বেড়েছে ১৬৮৩ টন

অর্থনীতি

আমাদের বার্তা, সাতক্ষীরা  

প্রকাশিত: ১৪:৫৪, ৬ এপ্রিল ২০২৫

সর্বশেষ

সাতক্ষীরায় ২ বছরে বাগদাচিংড়ি উৎপাদন বেড়েছে ১৬৮৩ টন

দেশে মোট রফতানিজাত চিংড়ির একটি বড় অংশ উৎপাদিত হয় উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায়। মানসম্মত রেণুর অভাব ও ভাইরাসসহ নানা সংকটের মধ্যেও এখানে প্রতি বছরই উৎপাদন বাড়ছে। 

সরকারি হিসাবে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিন বছরে এ জেলায় ৭৭ হাজার ৫শ ১ টন রফতানিজাত বাগদা চিংড়ি উৎপাদন হয়েছে। 
প্রতি কেজি ৮শ ৫০ টাকা হিসাবে এর রফতানি মূল্য দাঁড়ায় ৬ হাজার ৫শ ৮৭ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তবে প্রকৃত রফতানি মূল্য আরো বেশি বলে জানিয়েছেন চিংড়ি ব্যবসায়ীরা। 

এর মধ্যে ২০২৪ মৌসুমে ২৬ হাজার ৪শ ৮৫ টন, ২০২৩ মৌসুমে ২৬ হাজার ২শ ১৪ টন এবং ২০২২ মৌসুমে ২৪ হাজার ৮শ ২ টন রফতানিজাত বাগদা চিংড়ি উৎপাদিত হয়। এ হিসাবে দুই বছরের ব্যবধানে উৎপাদন বেড়েছে ১ হাজার ৬শ ৮৩ টন।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা গেছে, সত্তর-আশির দশকের দিকে সাতক্ষীরায় লবণ পানির চিংড়ি চাষ শুরু হয়। বাগদা, গলদা, হরিণা, চাকা ও চেম্বিসহ বিভিন্ন প্রজাতির চিংড়ি চাষ হয় এখানে। উৎপাদিত চিংড়ির ৯০ শতাংশ বিভিন্ন দেশে রফতানি এবং বাকি ১০ শতাংশ দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে সরবরাহ হয়।

কোভিড-পরবর্তী এ জেলায় বাগদা চিংড়ির উৎপাদন যেমন বেড়েছে, তেমনি রফতানি আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে জেলার চিংড়িচাষীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণসহ সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিএম সেলিম। 

তিনি বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও জেলায় রফতানিজাত বাগদা চিংড়ির উৎপাদন বেড়েছে। উৎপাদন আরো বাড়াতে সরকারের পক্ষ থেকে চিংড়িচাষীদের উন্নত প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে।

জেলার দেবহাটা উপজেলার সোনাতলা গ্রামের হাজী আবুবকর সিদ্দিক ৪০-৪৫ বছর ধরে চিংড়ি চাষের সঙ্গে জড়িত। চলতি মৌসুমে তিনি ১শ ৫০ বিঘার ঘেরে বাগদা চিংড়ি চাষ করেছেন। গত মৌসুমে একই পরিমাণ জমিতে দুই টনের বেশি রফতানিজাত বাগদা চিংড়ি উৎপাদন করেন তিনি। এ থেকে প্রায় ৯ লাখ টাকা লাভ হয় তার। তবে মানসম্মত রেণু পেলে উৎপাদন আরো বেশি হতো বলে জানিয়েছেন তিনি।

চিংড়িচাষী আবুবকর সিদ্দিক বলেন, কক্সবাজার থেকে যে চিংড়ি রেণু সাতক্ষীরায় সরবরাহ করা হয়, তার ঘেরে অবমুক্ত করার পর ৭০ শতাংশই মারা যায়। তাছাড়া ওইসব চিংড়ি রেণুতে জীবাণু রয়েছে কিনা তা জানার উপায় নেই। 

সরকারিভাবে পিসিআর ল্যাব না থাকায় পরীক্ষাও করা যায় না। ফলে, পোনা উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলো যেভাবে রেণু পোনা সরবরাহ করে, সেভাবেই কিনতে হয়।

সাতক্ষীরা জেলা মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রব বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে বাগদা চিংড়ির চাহিদা অনেক। তাছাড়া দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারেও প্রতি কেজি ৯শ টাকা থেকে এক হাজার ২শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে চিংড়ি উৎপাদনের পাশাপাশি রফতানিতে সরকারের নজর বাড়ানো দরকার।

তিনি বলেন, কিছু অসাধু ব্যক্তির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের চিংড়িশিল্পের বদনাম হচ্ছে। রফতানিজাত চিংড়ির ওজন বৃদ্ধি করার জন্য কেউ কেউ অপদ্রব্য পুশ করেন। এটা কঠোরভাবে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায়, আগামীতে দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী চিংড়িশিল্প মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অপরিকল্পিত ঘের নির্মাণের কারণে চিংড়ি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জিএম সেলিম। তিনি বলেন, একটি চিংড়ি ঘেরে যে পরিমাণ পানি থাকার প্রয়োজন, তা রাখতে পারেন না চাষীরা। তাছাড়া এখানকার চিংড়ি ঘেরগুলো বছরের পর বছর জীবাণুযুক্ত কাদা বহন করে চলেছে। ওই নোংরা পরিবেশে চিংড়ি টিকে থাকতে পারে না। ফলে, এক থেকে দেড় ইঞ্চি লম্বা হলেই রোগাক্রান্ত হয়ে যায়। এ জন্য জেলার চিংড়িচাষীদের ঘেরে সবসময় কমপক্ষে সাড়ে চার-পাঁচ ফুট পানি রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ছাড়া শুষ্ক মৌসুমে একবার হলেও চিংড়ি ঘেরের তলার কাদা পরিষ্কার করতে বলা হয়।

জনপ্রিয়