ঢাকা বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ , ১৪ কার্তিক ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আপাতত বন্ধ থাকবে

শিক্ষা

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০০:০০, ২৫ জুলাই ২০২৪

সর্বশেষ

ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে আপাতত বন্ধ থাকবে

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিক্ষোভ ও পরবর্তী সময়ে ঘটা সংঘাতে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের দুটি টোলঘর আগুনে পুড়ে গেছে। ১৮ জুলাই রাতে বনানী ও ১৯ জুলাই বিকেলে মহাখালী টোলঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এ অবস্থায় কারফিউ পুরোপুরি তুলে না নেওয়া পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত দিয়েছে এটির নির্মাণ ও পরিচালনা প্রতিষ্ঠান ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে (এফডিইই) কোম্পানি লিমিটেড। আগুনে আনুমানিক ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। আগুনে পুড়ে যাওয়া বনানী টোলঘরের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি ঠিক না করা পর্যন্ত অন্তত হাতে হাতে টোল নিয়ে (ম্যানুয়ালি) চালু করা যায় কি না, সেটাও ভাবছে প্রতিষ্ঠানটি।

এফডিইইর অপারেশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স বিভাগের ব্যবস্থাপক ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) হাসিব হাসান খান গতকাল বলেন, এক্সপ্রেসওয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছে। কারফিউ পুরোপুরি না ওঠা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এফডিইই। এক্সপ্রেসওয়ে চালু করার জন্য সরকারের কাছে নিরাপত্তা চায় প্রতিষ্ঠান। কারফিউ পুরোপুরি উঠে গেলে বনানী ও মহাখালী ছাড়া বাকি অংশ যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছের কাওলা থেকে শুরু হয়ে কুড়িল, বনানী, মহাখালী, তেজগাঁও, মগবাজার, কমলাপুর, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুতুবখালীতে গিয়ে শেষ হবে এই উড়ালসড়ক। পুরো উড়ালসড়কের দৈর্ঘ্য ১৯ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। হাতিরঝিল-সংলগ্ন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ শেষ হয়েছে।

হাসিব হাসান খান জানান, ১৮ জুলাই রাত পৌনে ৮টায় শত শত লোক বনানী টোলঘরে হামলা চালায়। তাদের মধ্যে একদল শীতাতপনিয়ন্ত্রণ যন্ত্র (এসি) খুলে নিয়ে যায়। কেউ কম্পিউটার, ক্যামেরা নিয়ে যায়। আরেক দল আগুন লাগিয়ে দেয়। আগুনে টোল বুথ, ছাউনি, সিস্টেম সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আর ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মহাখালী টোলঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। দুটি ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

কত ক্ষতি হয়েছে, তা জানতে চাইলে হাসিব হাসান খান বলেন, ‘আনুমানিক ৫০ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।’y

বনানী ও মহাখালী টোলঘর কবে নাগাদ চালু হবে, তা জানতে চাইলে হাসিব হাসান বলেন, যন্ত্রপাতি চীন থেকে কেনা। কবে নাগাদ তা কেনা যাবে ও স্থাপন করা যাবে, সেটা নিয়ে এখনো আলোচনা হয়নি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে হাসিব হাসান বলেন, মহাখালীতে যান চলাচল কম। বনানী থেকে অনেক বেশি যান চলাচল হয়। সে ক্ষেত্রে বনানী টোলঘরে ‘ম্যানুয়ালি’ টোল নিয়ে চালু করা যায় কি না, সেটা নিয়েও কোম্পানি ভাবছে। তবে আনুষ্ঠানিক কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সরকারি-বেসরকারি অংশীদারির (পিপিপি) বড় এই প্রকল্পে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ডের একটি ও চীনের দুটি প্রতিষ্ঠান বিনিয়োগ ও নির্মাণকাজের মাধ্যমে অংশীদার। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো থাইল্যান্ডভিত্তিক ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট পাবলিক কোম্পানি লিমিটেড, চীনের শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক অ্যান্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ ও সিনোহাইড্রো করপোরেশন লিমিটেড।

এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য এফডিইই কোম্পানি লিমিটেড নামের কোম্পানি গঠন করে ইতালিয়ান-থাই ডেভেলপমেন্ট। কোম্পানির অংশীদার তিন প্রতিষ্ঠানের শেয়ার যথাক্রমে ৫১, ৩৪ ও ১৫ শতাংশ। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ হলো এক্সপ্রেসওয়ের নির্বাহক প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পের মূল নির্মাণকাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৮ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা।

প্রকল্পটির পরিচালক এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার বলেন, এক্সপ্রেসওয়ের দুটি টোলঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এফডিইইর সঙ্গে সেতু কর্তৃপক্ষ শিগগিরই আলোচনায় বসবে। কবে নাগাদ এক্সপ্রেসওয়ে খুলে দেওয়া হবে এবং বনানী টোলঘর ম্যানুয়ালি চালু করা যায় কি না, তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

ঋণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থ সংকটে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের হাতিরঝিল অংশ ছাড়া বাকি কাজ পাঁচ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় বনানী ও মহাখালী টোলঘরে নতুন করে যন্ত্রপাতি কেনা সম্ভব কি না, সে সম্পর্কে জানতে চাইলে এ এইচ এম সাখাওয়াত আখতার বলেন, এসব নিয়েও আলোচনা করা হবে।

২০০৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রকল্পটি নেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিক নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ১ জানুয়ারি। গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর কাওলা থেকে তেজগাঁও পর্যন্ত সাড়ে ১১ কিলোমিটার দূরত্ব অংশ উদ্বোধন করা হয়। গত ২০ মার্চ বিএফডিসি গেট-সংলগ্ন নামার র‍্যাম্প যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।

 

জনপ্রিয়