ঢাকা রোববার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

nogod
nogod
bkash
bkash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
nogod
nogod
bkash
bkash

মাদারাসায় চাকরির ৯ বছর পর প্রার্থী জানতে পারেন নিয়োগ ভুয়া

শিক্ষা

আমাদের বার্তা ,ফরিদপুর

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ২৭ জুলাই ২০২৪

সর্বশেষ

মাদারাসায় চাকরির ৯ বছর পর প্রার্থী জানতে পারেন নিয়োগ ভুয়া

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়নের রশিবপুরা দাখিল মাদরাসায় গ্রন্থাগারিক পদে দীর্ঘ ৯ বছর চাকরি করেছেন ওবায়দুর রহমান। এর পর জানতে পারেন তার নিয়োগটি ছিল ভুয়া। দীর্ঘদিন চাকরি করলেও নানা অজুহাত দেখিয়ে তাকে কোনো বেতন দেওয়া হয়নি। এর পরও ভবিষ্যতে বেতনভাতা পাবেন এমন আশায় দিনের পর দিন চাকরি করে গেছেন তিনি। নিয়োগ পেতে ঘুষ হিসাবে দিয়েছিলেন ৫ লাখ টাকা।  বর্তমানে অর্থকষ্ট আর হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন ওবায়দুর।

১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রতিষ্ঠিত হয় রশিবপুরা দাখিল মাদরাসা। এ মাদরাসাটির শুরুতেই নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়। ২০১৩ খ্রিষ্টাব্দে জালিয়াতির মাধ্যমে ওবায়দুর রহমানকে গ্রন্থাগারিক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। একটি নিয়োগ কমিটি গঠন দেখানো হলেও নেওয়া হয়নি কোনো পরীক্ষা। আর নিয়োগ কমিটিতে থাকা উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার, ডিজির প্রতিনিধি হিসাবে যাদের দেখানো হয়েছে, তারা জানেনই না নিয়োগের খবর। তাদের স্বাক্ষর জাল করে এ নিয়োগ দেওয়া হয়।

ওবায়দুর রহমান জানান, পরীক্ষা না নিয়ে তার কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। মাদরাসার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত সুপার আনোয়ার হোসেন ও সাবেক সভাপতি নুরুল ইসলামের কাছে টাকা দিয়েছেন। দীর্ঘ ৯ বছর পর ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি জানতে পারেন তার নিয়োগটি ছিল ভুয়া। বিষয়টি জানতে পেরে বিভিন্নজনের কাছে ধর্ণা দিয়েও কোনো প্রতিকার পাননি। তিনি বলেন, 'আমি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। জমি বিক্রি করে তাদের টাকা দিয়েছিলাম। এখন আমার সব কিছু শেষ হয়ে গেছে। চাকরির বয়সও নেই। যারা প্রতারণার মাধ্যমে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তাদের বিচার চাই।

সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার আনোয়ার হোসেন বলেন, মাদরাসার সুপার হজে যাওয়ার কারণে আমাকে জোর করে ভারপ্রাপ্ত সুপার বানানো হয়। নিয়োগের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। সভাপতি কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেছেন, আমি তাই করেছি। সভাপতি প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে সেই সময় কিছুই বলতে পারিনি। টাকা সভাপতিই নিয়েছেন। তার কাছে মাদরাসার রেজুলেশন খাতা ছিল, তিনিই এসব করেছেন।

অন্যদিকে তৎকালীন সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, আমি অশিক্ষিত মানুষ। আমি কীভাবে এতগুলো মানুষের স্বাক্ষর জাল করে টাকা নিয়ে চাকরি দেব। আনোয়ার হোসেন সব কাগজপত্র ঠিক করে আমাকে সই দিতে বললে আমি সই দিয়েছি। আমি কোনো টাকা নিইনি। তবে আনোয়ার হোসেন যে টাকা ঘুষ হিসাবে নিয়েছে, সেখান থেকে মাদরাসার তিনটি ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে।

বর্তমান সুপার মো. ইদ্রিস আলী বলেন, আমি হজে থাকার সময় ভারপ্রাপ্ত সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এ অবৈধ কাজটি করেছেন। ভুয়া নিয়োগ দিয়ে যারা একটি দরিদ্র পরিবারের সন্তানকে পথে বসিয়েছেন, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দাবি করছি।

সভাপতি মুনসুর হোসেন বলেন, জালিয়াতি ও টাকার বিনিময়ে যারা এমন জঘন্য কাজ করেছে, তাদের শাস্তি হওয়া দরকার। অনিয়মে জড়িতদের বিষয়ে দ্রুতই কমিটি সভা করে সিদ্ধান্ত নেবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিএম কুদরত-এ-খুদা বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ভুক্তভোগীকে আইনের আশ্রয় নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

জনপ্রিয়