গত ৮ আগস্ট ক্লাস শুরু হওয়ার পর মাস পেরিয়ে গেলেও একাদশ শ্রেণির পাঁচটি বইয়ের ‘পাণ্ডুলিপি’ প্রস্তুত চূড়ান্ত করতে পারেনি জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এগুলো হলো- আবশ্যিক বাংলা সাহিত্য পাঠ, বাংলা সহপাঠ, ইংরেজি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বইয়ের বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন।
এনসিটিবির একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এসব বইয়ের পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত না হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবছর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে বিভাগভিত্তিক বইগুলো ছাড়া ওই পাঁচটি বই এনসিটিবির অধীনে ছেপে বাজারে বিক্রি করা হয়। প্রকাশকরা সরকারকে নূন্যতম ‘রয়্যালটি’ দিয়ে এনসিটিবি নির্ধারিত মূল্যে বইগুলি বাজারে বিক্রি করে থাকেন। আর শিক্ষার্থীরা বাজার থেকে এসব বই কেনেন।
এনসিটিবি ইতোমধ্যে ওই পাঁচটি বইয়ের প্রায় ৩১ লাখ বই ছাপার দরপত্র আহ্বান করেছে। কিন্তু বইগুলির পাণ্ডুলিপি ‘সংশোধন ও পরিমার্জনের’ কাজ চলছে। সরকার পরিবর্তন হওয়ায় পাণ্ডুলিপি পরিমার্জনের প্রয়োজন হচ্ছে। সেখানে সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের কিছু তথ্যের ‘সংশোধন ও পরিমার্জন’ করা হচ্ছে বলে এনসিটিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম রিয়াজুল হাসান বলেন, পাঁচটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করার কার্যক্রম চলমান। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এসব পাণ্ডুলিপি পরিমার্জনের কাজ শেষ করতে বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির একজন নেতা জানিয়েছেন, পাঁচটি বই ছাড়া একাদশ শ্রেণীর অন্যান্য বই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু প্রায় দুই মাস আগে টেন্ডার আহ্বান করা হলেও পাঁচটি বইয়ের পাণ্ডুলিপি প্রস্তুত করতে পারছেন না এনসিটিবি কর্মকর্তারা। এক সপ্তাহের মধ্যে বইগুলির পাণ্ডুলিপি প্রেসগুলোকে (যারা কাজ পাচ্ছে) সরবরাহ করা হবে বলে ১১ সেপ্টেম্বর এনসিটিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এর আগে কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় ১১টি জেলায় সাম্প্রতিক বন্যার কারণে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির সময় অন্তত ছয় দফায় বাড়ানো হয়। বর্তমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে নিশ্চায়নকৃত শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তির সময়সীমা ২৮ আগস্ট থেকে গত ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পূণরায় বৃদ্ধি করা হয়।
এবার সারাদেশে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় মোট ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন শিক্ষার্থী পাস করেছেন। উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ১৩ লাখ ৩৫ হাজার একাদশ শ্রেণীতে ভর্তির আবেদন করেছিলেন। তাদের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার অবধি ১৩ লাখের মতো শিক্ষার্থী কলেজ ও সমস্তরের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হয়েছেন।
এই সময়েও সব শিক্ষার্থী ভর্তি না হওয়ায় ভর্তি কার্যক্রম ম্যানুয়ালি বা উন্মুক্ত করা হয়। ম্যানুয়ালি ভর্তি কার্যক্রম এখনও চলমান রয়েছে বলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তপন কুমার সরকার জানিয়ছেন।