ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ , ১১ পৌষ ১৪৩১ আর্কাইভস ই পেপার

bkash
bkash
udvash
udvash
uttoron
uttoron
Rocket
Rocket
bkash
bkash
udvash
udvash

ঊর্ধ্বতন ১১ পদের সাতটিই শূন্য

কর্মকর্তা সংকটে খাবি খাচ্ছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড

শিক্ষা

আমাদের বার্তা প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ০৮:৪০, ৮ ডিসেম্বর ২০২৪

সর্বশেষ

কর্মকর্তা সংকটে খাবি খাচ্ছে মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড

কর্মকর্তা সঙ্কটে খাবি খাচ্ছে মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড। ঊর্ধ্বতন ১১ পদের মধ্যে সাতটিই শূন্য থাকায় গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো এগিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে। বাধাগ্রস্ত হচ্ছে রুটিন ওয়ার্কও। আর সারা দেশ থেকে সেবা নিতে আসা হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষক-কর্মচারীদের ভোগান্তির অন্ত থাকছে না। কাঙ্খিত সেবার আশায় বোর্ডের দুয়ারে দিনের পর দিন ধরনা দিয়ে চলেছেন তারা।

এ নিয়ে খোদ বোর্ড কর্মচারীদেরই আক্ষেপ, কর্মকর্তা সংকটে কার্যত স্থবিরতা নেমে এসেছে মাদরাসা শিক্ষার্থীদের একমাত্র বোর্ডে। সেবা বঞ্চিত এসব শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের গালমন্দও শুনতে হচ্ছে প্রতিদিন।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রায় আড়াই মাস ধরে উর্দ্ধতন ১১টি পদের মধ্যে সাতটিই শূন্য। এ বিষয়ে বোর্ড থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এব কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে একাধিকবার চিঠি দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।  বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ফরিদ উদ্দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব পদে ছিলেন। সেখান থেকে পূর্ণ সচিব করে তাকে মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে দেওয়া হয়েছিলো। তিনি এ বিভাগের সচিব নিযুক্ত হয়েই কোনো বাছবিচার না করে শুধু তার পূর্ব পরিচিত একজনকে মাদরাসা বোর্ডের চেয়ারম্যান নিযুক্ত করেছিলেন। সম্প্রতি ফরিদ উদ্দিনকে ওএসডি করা হয়েছে। নতুন সচিব দেওয়া হয়েছে খ ম কবিরুল ইসলামকে।  
জানা গেছে, এই সঙ্কটের বিষয়টি সম্প্রতি শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি যাচাই করে মাদরাসা বোর্ডের শূন্য পদগুলোতে দ্রুত পদায়নের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার, প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক, উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন), উপ-রেজিস্ট্রার (কমন), উপ-মাদরাসা পরিদর্শক-২, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (গোপনীয়) ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ পদ শূন্য রয়েছে। গত ১৫ সেপ্টেম্বর মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রকাশনা নিয়ন্ত্রককে এবং গত ২৬ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রার, উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন), উপ-রেজিস্ট্রার (কমন), উপ-মাদরাসা পরিদর্শক-২, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (গোপনীয়) ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ পদে প্রেষণে কর্মরত সাত কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়। কিন্তু এসব পদে কোনো কর্মকর্তাকে অদ্যাবধি পদায়ন করা হয়নি। সংশ্লিষ্ট পদ শূন্য থাকায় বোর্ডের কাজ গতি হারিয়েছে।

এসব পদে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার থেকে ডেপুটেশনে পদায়ন করা হয়। যা শিক্ষা মন্ত্রণালয় করে থাকে।

মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের কর্মচারীরা জানান, প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রম, সময়াবদ্ধ ক্রয় প্রক্রিয়া, মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটি, গভর্নিং বডি, নির্বাহী কমিটি, এডহক কমিটি অনুমোদনের আবেদন নিষ্পত্তি কার্যক্রম, আওতাধীন মাদরাসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পত্তি কার্যক্রম, অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন আবেদন নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম, আওতাধীন মাদরাসাগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের চূড়ান্ত বরখাস্তের আবেদন নিষ্পত্তি ও বিভিন্ন মামলার বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেন রেজিস্ট্রার। কিন্তু এই পদে কেউ না থাকায় কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যমান কারিকুলাম পরিমার্জন কাজে এনসিটিবিকে সহায়তা প্রদান, দাখিল ও আলিমের সিলেবাস ও মানবণ্টন পুনর্বিন্যাসকরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখভাল করেন প্রকাশনা নিয়ন্ত্রক। তিনিও বদলি হয়েছেন। প্রশাসনিক কার্যক্রম, মাদরাসাগুলোর ম্যানেজিং কমিটি, গভর্নিং বডি, নির্বাহী কমিটি, এডহক কমিটি অনুমোদনের আবেদন নিষ্পত্তি কার্যক্রম, অধিভুক্ত মাদরাসা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অভিযোগ নিষ্পত্তি কার্যক্রম, অভ্যন্তরীণ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন আবেদন নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম, আওতাধীন মাদরাসাগুলোর শিক্ষক-কর্মচারীদের চূড়ান্ত বরখাস্তের আবেদন নিষ্পত্তি ও বিভিন্ন কাজ করেন উপ-রেজিস্ট্রার (প্রশাসন)। এই পদেও কেউ না থাকায় সেবাপ্রার্থী ও কর্মরতরাও নানা ভোগান্তির সম্মুখীন হচ্ছেন।

নাম ও বয়স পরিবর্তন, সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম, শিক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন, রেজিস্ট্রেশন সংশোধন, আওতাধীন মাদরাসাগুলোর ই-অফিস ব্যবস্থাপনার পাসওয়ার্ড পরিবর্তন, বোর্ডের পরিবহন ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত কার্যক্রম প্রভৃতি করেন উপ-রেজিস্ট্রার (কমন)। সরেজমিন, বয়স পরিবর্তনের কারণে একাধিক ব্যক্তি মাদরাসা বোর্ডে ঘুরাঘুরি করছেন। অনলাইনে আবেদন করেও বোর্ডের তারিখ পাচ্ছেন না বলে জানান।

দাখিল পরীক্ষা-২০২৫ এর প্রশ্নপত্র পরিশোধন কাজ, নাম ও বয়স শুদ্ধকরণ সংক্রান্ত আবেদন নিষ্পত্তি কার্যক্রম, বিদেশগামী শিক্ষার্থীসহ অন্য শিক্ষার্থীদের সনদ, নম্বরপত্র যাচাই/সত্যায়ন, আলিম পরীক্ষা-২০২৪ পুনর্নিরীক্ষণ পরিচালনা করেন উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (গোপনীয়)। এই কর্মকর্তার সংকটের কারণে আগামী দাখিল পরীক্ষার কার্যক্রম নিয়েও স্থবিরতা কাজ করছে। এছাড়াও উপ-মাদরাসা পরিদর্শক-২ ও কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ না থাকার ফলেও দৈন্যদশা বিরাজ করছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, কারিকুলাম পরিমার্জন কাজে এনসিটিবিকে সহায়তা প্রদান, দাখিল ও আলিমের সিলেবাস ও মানবণ্টন পুনর্বিন্যাসকরণ সংক্রান্ত কার্যক্রম দেখাশুনা করেন কারিকুলাম বিশেষজ্ঞ। সম্প্রতি নতুন কারিকুলাম বাতিল করে সৃশনশীল কারিকুলামে ফিরছে শিক্ষা ব্যবস্থা। কিন্তু এই পদে কেউ না থাকায় মাদরাসা বোর্ডের কারিকুলামেও কোনো অগ্রগতি নেই।

 

জনপ্রিয়