নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট এলাকায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় মোতাসিম মাসুদ (২২) নামে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনাকে হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) শিক্ষার্থীরা। অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতসহ ছয় দফা দাবিও জানান তারা।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) পলাশীর মোড়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা এসব দাবি জানান।
ব্রিফিংয়ে ঘটনার বিবরণ দিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীরা বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে পূর্বাচল নীলা মার্কেটের সামনে ৩০০ ফিট রাস্তায় সাবেক সেনা কর্মকর্তার ছেলে সাদমান মদ্যপ অবস্থায় বেপরোয়া গাড়ি চালিয়ে বুয়েটের কম্পিউটার সাইন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহতাসিম মাসুদকে হত্যা করে। ওই ঘটনায় আহত হয়েছে একই ব্যাচের অমিত সাহা ও মো. মেহেদি হাসান খান।
আহত অমিতের বরাত দিয়ে তারা বলেন, পুলিশের সংকেত পেয়ে তারা বাইক থামিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বলছিল। আমরা সুস্পষ্ট প্রমাণ পেয়েছি, এই ঘটনায় অভিযুক্ত চালক মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন এবং বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালাচ্ছিলেন।
তারা আরো বলেন, অভিযুক্ত গাড়িচালকের বাবা একজন প্রভাবশালী ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল। তার কারণে আমাদের এক ভাইকে প্রাণ দিতে হলো। আমাদের আরো দুই ভাই গুরতর আহত। এদিকে গাড়িচালকের ক্ষমতাশালী আত্মীয়রা মামলার মোড় ঘোরানোর, এমনকি মামলা যাতে না নেওয়া হয়, তার ব্যবস্থা করতে ব্যস্ত।
হত্যামামলা লেখার প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে তারা বলেন, আমরা আমাদের ভাইয়ের হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। যেকোনও মূল্যে ক্ষমতার বিপরীতে ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা হোক।
তাদের ছয় দফা দাবি হলো– যেকোনো মূল্যে এই হত্যাকাণ্ডের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা; আহতদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ ব্যয়ভার অবশ্যই বিবাদী পক্ষকে বহন করতে হবে; নিহত মাসুদের পরিবারকে যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে বিবাদীপক্ষকে বাধ্য করতে হবে; তদন্ত কার্যক্রমে বাধা দেওয়া চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে; আহতদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার বিষয়ে বুয়েট কর্তৃপক্ষকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করতে হবে এবং সড়ক দুর্ঘটনার কারণে আর কারো প্রাণ যেন না যায় এবং সড়কে নিরাপত্তা যেন নিশ্চিত হয়, সেই বিষয়ে সরকারকে যথাযত ভূমিকা রাখতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে ৩টার দিকে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গাড়ির চালককে আটক করেছে পুলিশ।