রাজধানীর দুটি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অবৈধ নোট-গাইড জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো অনুপম প্রিন্টার্স লিমিটেড ও লেটার অ্যান্ড কালার লিমিটেড। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে ম্যাজিস্ট্রেটসহ এনসিটিবির কর্মকর্তারা ওই প্রতিষ্ঠান দুটিতে ঝটিকা অভিযান চালান।
সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড সূত্র জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠান দুটিকে জরিমানাও করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তীতে আরো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র জাতীয় প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তা ও পূর্ণাঙ্গ ডিজিটাল পত্রিকা দৈনিক শিক্ষাডটকম-এ ‘নিষিদ্ধ নোট-গাইড কোম্পানি মালিকরা সিডি নিতে এনসিটিবিতে!’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
প্রতিবেদনটি নজরে এলে এমন অপকর্মে জড়িত পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নোট-গাইড প্রকাশকদের খুঁজে বের করতে গোয়েন্দা সংস্থা ও দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশের এসবি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে সংস্থাগুলোকে যতো দ্রুত সম্ভব অনুসন্ধানী প্রতিবেদন দিতে বলেন তিনি। তারপর শিক্ষাখাত ধ্বংসের এমন অপকর্মে জড়িত পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নোট-গাইড প্রকাশকদের খুঁজে বের করতে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে এনসিটিবি। কমিটির প্রতিবেদনে এনসিটিবির কয়েকজন কর্মকর্তা স্বীকার করেন যে, নোট-গাইডের মালিকদের কাছে এনসিটিবি থেকে তথ্য পাচার হওয়া সম্ভব। এছাড়া এনসিটিবির একজন স্থায়ী কর্মকর্তাকে চিহ্নিত করে তাকে ওই পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয়। তাকে বরখাস্ত করার প্রক্রিয়া চলছে বলেও এনসিটিবি সূত্রে জানা যায়।
এদিকে গত ৩ ডিসেম্বর প্রাক-প্রাথমিক থেকে দশম ও সমমান শ্রেণির বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপা হয়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছানোর আগে সব ধরনের সহায়ক বই বা নোট-গাইড ছাপা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেয় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
কিন্তু ওই নির্দেশের তোয়াক্কা না করে অসাধু প্রেস মালিকরা অবাধে নোট-গাইড ছাপিয়ে যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে নোট-গাইড ছাপা বন্ধে প্রেস মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য ডিসিদের নির্দেশ দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি নিয়ে গতকাল দৈনিক আমাদের বার্তা ও দৈনিক শিক্ষাডটকমে ‘নোট-গাইড ও ডায়েরি ছাপা বন্ধে মোবাইল কোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। একই দিন দুই প্রেসের বিপুল অবৈধ নোট-গাইড জব্দ করে ধ্বংস করার খবর পাওয়া গেলো।