শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলাম বলেছেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব সাবজেক্ট চালু রয়েছে, তার মধ্যে অনেকগুলোই উন্নত বিশ্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় বলা যায়।
তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ইতোমধ্যে তাদের সক্ষমতা জানান দিয়েছেন। বিশেষ করে সুন্দরবন ও উপকূলীয় লবণাক্ত এলাকায় কৃষি উৎপাদনে তাদের গবেষণা অত্যন্ত চমৎকার। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের গবেষণা হওয়া উচিত জনকল্যাণ ও বাস্তবমুখী। যার মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখা যায়। [inside-ad]
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, গবেষণায় বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় বিপ্লব এসেছে কৃষিক্ষেত্রে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে খাদ্যের যে সংকট ও প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, তা দূরীকরণে কৃষিজ পণ্য বিশেষ করে শাক-সবজি, ফলমূল ও মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ আশানুরূপ সাফল্য পেয়েছে। এক্ষেত্রে কৃষিবিজ্ঞানীদের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম লক্ষ্য নিম্নবিত্ত মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করা। এক্ষেত্রে বিগত সরকারের রেখে যাওয়া খোঁড়া অর্থনীতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ইতোমধ্যে সরকার সেই পরিস্থিতি সামলে অর্থনীতিকে একটি স্থিতিশীল পর্যায়ে নিয়ে এসেছে, যোগ করেন তিনি।
প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলাম বলেন, নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। যাতে শিক্ষার্থীরা শুধু চাকরির পেছনে না ছুটে নিজেরাই বড় কিছু করার স্বপ্ন দেখা এবং উদ্যোক্তা হিসেবে সমাজ পরিবর্তনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষা এবং প্রযুক্তি জ্ঞানে দক্ষ করে তুলতে হবে। কারণ, বিদেশে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতে গেলেও ইংরেজিসহ অন্যান্য ভাষায় দক্ষতা অর্জন করতে করতে হয়। এর পাশাপাশি প্রযুক্তি জ্ঞান না থাকলেও কর্মক্ষেত্রে এখন সফল হওয়া যায় না।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ব্যাপক গবেষণার জন্য আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ফান্ড সংগ্রহের আহ্বান জানান। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য স্বতন্ত্র বেতন কাঠামো তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ এবং বিগত সরকারের সময়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির সমালোচনা করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম এর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান। এ সময় স্বাগত বক্তৃতা করেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. নূরুন্নবী।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস, শিক্ষা ও গবেষণায় সাম্প্রতিক অর্জন তুলে ধরেন দ্য অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আশিক উর রহমান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এস এম মাহবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা) প্রফেসর ড. এম আমিনুল ইসলামকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে সম্মাননা ক্রেস্ট দেয়া হয়।
এর আগে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছালে উপাচার্য তাঁকে ফুল দিয়ে স্বাগত জানান। এ সময় উপ-উপাচার্য ও ট্রেজারারসহ অন্যান্য শিক্ষকেরা উপস্থিত ছিলেন।